গত ২৮শে নভেম্বর দেশের ন’টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এ এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৫ লাখ ৮৮ হাজার ৬৫৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে, ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৫৭১ জন। এ ন’ সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দিয়েছিল ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন। এর মধ্যে গড় পাসের হার ৮৭ শতাংশের কিছু বেশি। সব বোর্ড মিলিয়ে জিপি এ-৫ পেয়েছে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৬০৯ জন ,যা গতবারে ছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন।
সাধারনত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। কিন্তু গত বছরে তা সম্ভব হয় নি। চলতি বছর এ পরীক্ষা শুরু হবার কথা ছিল গত ১৯ জুন। কিন্তু বন্যার কারণে পরীক্ষা শুরুর দু’দিন আগে তা স্থগিত করা হয়। এরপর আগস্টে এ পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হলেও তা সম্ভব হয় নি। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা শুরু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর। শুধু তাই নয় এ বছরের শিক্ষার্থীরা ২০২০ সালে নবম শ্রেণীতে উঠেছিল। মাত্র আড়াই মাস ক্লাস করার পর করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সীমিত আকারে ক্লাস শুরু হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এসব শিক্ষার্থী সশরীরে তেমন একটা ক্লাস করতে পারে নি। অনলাইনে ক্লাস করে নিজেদের যোগ্যতায় এবার তারা ভালো ফল করেছে।
করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছর মাত্র তিনটি নৈবাচনিক বিষয়ে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে কম নম্বরে ও সময়ে পরীক্ষা হয়েছিল। বাকি বিষয় গুলো মূল্যায়ন হয়েছিল জেএসসি ও জেডিসির বিভিন্ন বিষয়ের নম্বরের ভিত্তিতে। ফলে পাশের হার বেশি ছিল। কিন্তু এবার তিনটি বাদে বাকি সব বিষয়েই পরীক্ষা হয়েছে। ফলে গতবারের চেয়ে পাশের হার কিছুটা কমেছে। তারপরও সব মিলিয়ে এবারের ফলাফল সন্তোষজনক। বেশ কিছুদিন থেকেই পাবলিক পরীক্ষায় মেয়েরা খুব ভালো ফলাফল করছে। এবার এসএসসিতেও তার ব্যতিক্রম ঘটে নি। পাশের হারও জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে। ন’টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড ছাত্রীদের পাশের হার ৮৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। ছাত্রদের পাশের হার ৮৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এসএসসিতে মোট জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ১ লাখ ৩১ হাজার ৩০৪ জন এবং ছাত্র ১ লাখ ২ হাজার ৪৫৯ জন।
পরীক্ষায় সাফল্য অর্জনকারী সব ছাত্র-ছাত্রীদের অভিনন্দন জানাই। সেই সাথে প্রত্যাশা করছি, এখন সেশন জট শুরু হয়ে গেছে। কাজেই দ্রুততম সময়ে তাদের ভর্তির ব্যবস্থা করে নিয়মিত ক্লাস করার সুযোগ করে দেওয়া খুবই জরুরি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টির প্রতি নজন দেবেন।