যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের কুলিয়া গ্রামের মৃত মোরশেদ আলীর স্ত্রী আমেনা বেগমের বিরুদ্ধে ৯ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
আমেনা বেগমের সন্তান বিল্লাল হোসেন নিজের পিতার নাম মুছে মুক্তিযোদ্ধা মৃত মশিয়ার রহমানকে পিতা সাজিয়ে হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ, ঝিকরগাছা কমিটির সভাপতি। তারা ২০১৩ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত সরকারি এ অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকায় ৪৭৭৫৩ নং এ মোঃ তারা চাঁদ মন্ডলের পুত্র মোঃ মশিয়ার রহমানের নাম রয়েছে। যার বেসামরিক গেজেট নং ১৬৪৫। ঝিকরগাছার পানিসারা কুলিয়া গ্রামের আমেনা বেগমের স্বামী মোরশেদ আলীর পিতার নামও তারা চাঁদ মন্ডল। এই তারা চাঁদ মন্ডলকে পুঁজি করে আমেনা বেগম তার এন আই ডি কার্ডে স্বামীর নাম মোরশেদ এর স্থলে মৃত মশিয়ার রহমান করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার ওয়ারেশ সেজে ব্যাংক থেকে প্রতিমাসে সরকারি ভাতা উত্তোলন করছেন। তার বড় ছেলে বিল্লাল হোসেনও নিজের আইডি কার্ডে পিতার নাম মোর্শেদ মুছে মৃত মশিয়ার রহমান করে ঝিকরগাছা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের সভাপতি হয়েছেন।
আমেনা বেগমের আই ডি ( ১৯৬২৪১১২৩৭১৮৬৮৭০২) তে স্বামীর নাম রয়েছে মোরশেদ আলী। অথচ তিনি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করার সময় এনআইডির ফটোকপিতে স্বামীর নাম করেছেন মৃত মশিয়ার রহমান।
একই ভাবে বিল্লাল হেসেনের আইডিতে (১৯৮২৪১১২৩৭১৯২০৮৬৩) পিতার নাম রয়েছে মোরশেদ আলী। কিন্তু তার মায়ের অ্যাকাউন্ট করার সময় নমিনি করতে এনআইডির ফটোকপিতে পিতার নাম মৃত মশিয়ার রহমান করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে কুলিয়া গ্রামের অভিযুক্ত আমেনা বেগম জানান, তার স্বামীর নাম মশিয়ার আর লোকে ডাকতো মোর্শেদ। এ ব্যাপারে আমার ছেলে বিল্লালই ভালো জানে। কুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান বলেন, কোনো কাগজেই মশিয়ার নেই। তার সব কাগজে মোরশেদ লেখা আছে। তবে নাম সংশোধন এর প্রক্রিয়া চলছে। কয়েকদিনের মধ্যে মোরশেদ মশিয়ার হয়ে যাবে।
এদিকে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব নামক সংগঠনের জেলা পর্যায়ের এক নেতার মাধ্যমে ধুরন্ধর বিল্লাল হোসেন এনআইডি সংশোধনের জন্য দেড় লাখ টাকার চুক্তিও করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুল হক বলেন, আমি বিষয়টি দেখলাম। অভিযোগ আকারে পেলে তাদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়ে প্রমাণ করতে হবে যে তারা আসলেই মুক্তিযোদ্ধা মশিয়র রহমানের ওয়ারেশ। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।