আজ ৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী মুক্ত দিবস। ১৯৭১সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করে মুক্তিসেনারা। ১৯৭১ সনের মার্চ মাসে সারা দেশের মত পটুয়াখালী ও উত্তাল হয়ে ওঠে।
২৬ এপ্রিল। সকাল ১০ টায় পাক বাহিনীর ৪ টি বোমারু বিমান ৩ ঘন্টা বোমা বর্ষন করতে থাকে। সাথে সাথে সমান ভাবে শেল নিক্ষেপ করে পটুয়াখালীর উপর। শহরের ২নং বাঁধ ও পশু হাসপাতাল এলাকায় নামিয়ে দেয়া হয় ছত্রীসেনা। হানাদাররা মতবর বাড়ির ১৯ জন নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যা করে একই স্থানে। ডিসিবাংলো সংলগ্ন ৭ জন আনসার সদস্য সম্মূখ যুদ্ধে শহীদ হন।
বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে আনা বন্দিদের বর্তমান পুরাতন জেলখানার পশ্চিম-দক্ষিণ কোনে গুলি করে হত্যা এবং একই সাথে নারী নির্যাতন করা হতো। সেখানকার গণ কবর গুলো সেখানে ওই বিভিষিকাময় দিনগুলি মনে করিয়ে দেয়। পুরান বাজারসহ হিন্দু প্রধান এলাকাগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয়। সে কথা মনে করে আজও শিউরে ওঠে ক্ষতিগ্রস্থ মুক্তিযোদ্ধারা।
১৮ নভেম্বর পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের গলাচিপার পানপট্টি ক্যাম্পে আঘাত হানলে পাল্টা আক্রমনে জবাব দিতে থাকে মুক্তিযোদ্ধারা। টানা ৮ ঘন্টার সম্মুখ যুদ্ধে প্রায় অর্ধশত পাকসেনা নিহত হয়। পরে ৩৮৫ জন পাক সেনা নিয়ে মেজর ইয়ামিন খান পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে মুক্তি সেনারা পটুয়াখালী শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়ে চুড়ান্ত হামলার প্রস্তুতি নেয়। ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাক সেনারা লঞ্চযোগে পটুয়াখালী শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়।
৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী শত্রু মুক্ত হয়। ওই দিন সকালে স্থানীয় শহীদ আলাউদ্দিন শিশু পার্কে মুক্তিযোদ্ধারা উত্তোলন করে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা।