খেলা মাত্রই জয়-পরাজয়। তাই বলে চলতি বিশ্বকাপ ফুটবলের জয়-পরাজয় যুদ্ধটা লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার মধ্যে ঘটেনি। এমনকি মেসি আর নেইমারও একে অপরের সঙ্গে চুলোচুলি কিংবা মারধোর করেননি। বরং ক্লাব ফুটবলে ফ্রান্সের পিএসজি নামে একই দলের সতীর্থ মেসি আর নেইমারের মধ্যে সম্পর্ক খুবই মধুর। কিন্তু আমাদের এই বিচিত্র দেশে কত ধরনের বিচিত্র ঘটনা যে ঘটে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। বাংলাদেশে মেসি আর নেইমার-সমর্থকেরা যেনো যেকোনো মুহূর্তে লঙ্কাকাণ্ড বাধিয়ে দিতে সদা প্রস্তুত।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কিংবা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব-যুদ্ধ হয়, তা প্রকট হয়ে ওঠে কখনো কখনো। আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা দুজন ব্রাজিল সমর্থকের ওপর চড়াও হয়ে ওঠার থেকে শুরু করে আহত এমনকি মৃত্যু ঘটনার যে খবরগুলো গণমাধ্যমে বেরিয়েছে, সেটা নিশ্চয় প্রমাণ করে যে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা কিংবা বিশ্বকাপ ফুটবলে আবেগহীন ভক্তরা মিছিমিছি যেকোনো মুহূর্তে ভীষণ কাণ্ডজ্ঞানশূন্য হয়ে উঠতে পারে।
এবারের বিশ্বকাপ ফুটবলে বাংলাদেশ যেনো 'আবেগহীন' যুগে প্রবেশ করল। কারণ, বিশ্বকাপ ফুটবল উন্মাদনার খেসারতে ইতোমধ্যে জীবন দিয়ে দিছে ১২ জন। ফুটবল নিয়ে তর্ক-বিতর্কের জের ধরে সংঘর্ষে, পতাকা টানাতে গিয়ে ছাঁদ থেকে পড়ে কিংবা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, খেলা দেখার সময় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তারা মারা গেছে। এঁদের বেশির ভাগই কিশোর ও তরুণ।
এদিকে ফুটবল নিয়ে তর্ক-বিতর্কের জেরে বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষে এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন। হতাহতদের সবাই বিশ্ব ফুটবলের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থক।
বিশ্বকাপ শুরুর আগের সপ্তাহ থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত গত এক মাসের সংবাদ ও তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ সময়ের মধ্যে দেশের তিন জেলায় খুন হয়েছেন তিনজন, সমর্থন করা দলের পতাকা টাঙাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ও ছাঁদ থেকে পড়ে মারা গেছেন ৭ জন এবং খেলা দেখার সময় উত্তেজিত হয়ে অসুস্থ হওয়ার পর দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া খেলাকে কেন্দ্র করে লালমনিরহাট, ভোলা, রাজশাহীসহ সাতটি জেলায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও মারামারি হয়েছে।
তিন জেলায় তিন খুন : বিশ্বকাপে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে তর্কবিতর্কের জেরে দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে গত ৯ ডিসেম্বর রাতে ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের পর। এর একটি হয়েছে ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলায়, অন্যটি হয়েছে হবিগঞ্জের বাহুবলে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, ৯ ডিসেম্বর রাতে সাভারের ডগরমোড়া এলাকার একটি চায়ের দোকানে ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়ার খেলা দেখেতে যান হাসান মিয়া (২৬) নামের এক তরুণ। খেলা শেষে রাত ১২টার দিকে ম্যাচের ফলাফল নিয়ে ওই দোকানে থাকা কয়েকজন তরুণের সঙ্গে তর্কে জড়ান হাসান। বাগ্বিতণ্ডার মধ্যেই ওই তরুণেরা হাসানকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। তাঁকে উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
একই রাতে হবিগঞ্জের বাহুবলের আদিত্যপুর এলাকায় খেলা শেষে আর্জেন্টিনা সমর্থক ও ব্রাজিল সমর্থক দুই কিশোরের মধ্যে ঝগড়া বাধে, যাতে জড়িয়ে পড়েন তাদের অভিভাবকেরা। এর জের ধরে পরদিন সকালে এক কিশোরের বাবাকে ধানখেতে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে জখম করেন আরেক কিশোরের স্বজনেরা। শহীদ মিয়া নামের আহত ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে ৬ ডিসেম্বর ভোলার সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের চেউয়াখালী গ্রামে আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের সমর্থকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে মো. হৃদয় (২০) নামের এক তরুণ নিহত হন। ৩ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগে নুডলস খাওয়ার আয়োজন নিয়ে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের দুটি পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে ৬ ডিসেম্বর রাতে আবার সংঘর্ষ বাধলে প্রতিপক্ষের হামলায় হৃদয় মারা যান।
পতাকা টাঙাতে গিয়ে মৃত্যু : বিশ্বকাপের মৌসুমে বাংলাদেশিরা তাঁদের প্রিয় দলের প্রতি সমর্থন জানাতে সবচেয়ে বেশি যে কাণ্ডটি করেন, তা হলো বাসাবাড়ি বা উঁচু গাছের মগডালে ওই সব দেশের পতাকা ওড়ানো। প্রতিবছরই পতাকা টাঙাতে গিয়ে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এবারও দেশের সাতটি জেলায় পতাকা টাঙাতে গিয়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন মারা গেছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আর একজনের মৃত্যু হয়েছে ছাঁদ থেকে পড়ে।
মারা যাওয়া সাতজন হলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী, নওগাঁর ধামইরহাট, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, টাঙ্গাইলের সখীপুর, খাগড়াছড়ি সদর, ময়মনসিংহের গফরগাঁও এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা সবাই বয়সে কিশোর ও তরুণ। এর মধ্যে চারজন ব্রাজিলের পতাকা টাঙাতে গিয়ে ও তিনজন আর্জেন্টিনার পতাকা টাঙাতে গিয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়া পতাকা টাঙাতে গিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জে দুই শিশুসহ হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চারজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দগ্ধ হয়েছেন।
খেলার উত্তেজনায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যু : সংঘর্ষ, দুর্ঘটনার বাইরেও খেলার উত্তেজনা, উচ্ছ্বাসে অসুস্থ হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ফরিদপুর ও নেত্রকোনা জেলার এই দুই ব্যক্তি আর্জেন্টিনার পাঁড় সমর্থক ছিলেন। তাঁদের একজন গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার সঙ্গে মেক্সিকো ম্যাচের পর এবং অন্যজন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের পর মারা যান। তাঁরা দুজনই খেলা দেখার সময় ‘হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে’ মারা গেছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
৫ জেলার সংঘর্ষে আহত ২৬ : বিশ্বকাপের উত্তাপ চায়ের দোকানের তর্ক আর সামাজিক মাধ্যমের খুনসুটি পেরিয়ে সরাসরি সংঘাতও সৃষ্টি করেছে। এ সংঘাতের শুরু হয়েছিল গত ২৩ নভেম্বর। সেদিন বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হেরে যায় দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। এ নিয়ে খেলা শেষে ঢাকার সাভার উপজেলার বক্তারপুর এলাকার এবং গোপালগঞ্জ সদরের নবীনবাগ মার্কাস মহল্লায় আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়ান। এর মধ্যে সাভারে দুই কিশোরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখমের ঘটনাও ঘটে। গোপালগঞ্জে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের হামলায় আহত হন ব্রাজিলের ৫ সমর্থক।
ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ম্যাচগুলো বড় পর্দায় দেখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের মাঠে এসেছেন কয়েক হাজার দর্শকব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ম্যাচগুলো বড় পর্দায় দেখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের মাঠে এসেছেন কয়েক হাজার দর্শক।
এরপর ৩ ডিসেম্বর লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা রেলস্টেশন এলাকায় আর্জেন্টিনার পতাকা চুরি হওয়ার ঘটনায় ব্রাজিল সমর্থকদের সঙ্গে দলটির সমর্থকদের বাগ্বিতণ্ডার পর সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন, যার মধ্যে দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
৬ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগে ভোলার সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের চেউয়াখালী গ্রামে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের দুপক্ষের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়, সেটিতেও আটজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছিল।
বিশ্বকাপের এ উন্মাদনায় বাংলাদেশে সর্বশেষ মারামারির ঘটনা ঘটেছে ১০ ডিসেম্বর রাতে রাজশাহীর রাজপাড়া থানার নতুন বিলশিমলার বন্ধ গেট এলাকায়। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের হারের পর আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা উল্লাস করলে নিষেধ করেন এক ব্রাজিল সমর্থক। এর জের ধরে আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই ব্রাজিল সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এ সময় দুজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
অন্যদিকে, রাজশাহীর বিলশিমলা এলাকাটি একটি ‘ঐতিহাসিক’ মারপিটের ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল। আগে রেষারেষি থাকুক আর না-ই থাকুক, ব্রাজিল হেরে বিদায় নেওয়ার পর আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা ব্রাজিলের দুজন সমর্থককে পিটিয়েছেন, সেটাই সবচেয়ে বড় সত্য এবং সেই সঙ্গে এটাও বলা দরকার, একই ঘটনা ঘটতে পারত বিপরীতভাবে বিলশিমলা অথবা দেশের যেকোনো জায়গায়, যেখানে ব্রাজিলের জায়গায় পিটুনি ঘটনার শিকার হতে পারত আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা। এর সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, মেসি নিজেকে যতটা আর্জেন্টাইন বলে মনে করেন কিংবা নেইমার নিজেকে যতটা ব্রাজিলিয়ান বলে মনে করেন, বাংলাদেশে মেসি-নেইমার সমর্থকেরা নিজেদের তাঁদের চেয়েও অনেক বেশি আর্জেন্টাইন বা ব্রাজিলিয়ান হিসেবে মনে করে থাকেন। তাই মেসি আর নেইমারের মধ্যে মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়েও লাতিন আমেরিকা থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থিত বাংলাদেশে ওই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দল দুটির পক্ষ নিয়ে যা খুশি তা-ই করার লাইসেন্সের অধিকারী হওয়া যায়।
এসব সংঘাত ও মৃত্যুর বিষয়ে বলাবাহুল্য যে, আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা না থাকায় যে যেমন অন্যায়ই করুক না কেন, পার পেয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে সৃজনশীল কাজ, গঠনমূলক কাজ বা উৎপাদনমুখী কাজ করার বিষয়গুলো সেভাবে নেই। অফুরন্ত সময় হাতে থাকে বলেই মানুষ এ ধরনের কাজ করে। এই উন্মাদনা থেকে দূরে রাখতে তরুণদের উৎপাদনমুখী কাজে অন্তর্ভুক্ত করার বিকল্প নেই।
খেলাধুলা সব সময় মানুষের মনকে প্রফুল্ল করলেও হাজার হাজার মাইল দূরের খেলা পর্দায় দেখে অতি-আবেগী হওয়া আমি সমর্থন করি না। তবে খেলা ইতিবাচক মানসিকতার দিকে যে নিয়ে যায়, সেটা অস্বীকার করি না। চার বছর পর পর যখন ফুটবল বিশ্বকাপ হয়, তখন তার প্রভাব পড়ে মানুষের মনে। কোনো সন্দেহ নেই, এটা সত্যিই ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’। রক্তের ভেতরে যে নাচন সৃষ্টি করে বিশ্বকাপ ফুটবল, সেটা সত্যিকার অর্থেই ইতিবাচক। পৃথিবীর বহু দেশেই ফুটবলের ফ্যানাটিক সমর্থকের দেখা মেলে, কিন্তু এটাও বিবেচ্য যে সেই দেশগুলোতেই এ রকম উন্মত্ত দর্শকের দেখা মেলে, যে দেশগুলো ফুটবল খেলছে বিশ্বকাপে। আমাদের দেশ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গেই প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠে না, অথচ ছাগলের ৩ নম্বর বাচ্চার মতো কোনো কিছু বুঝে না বুঝে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জন্য নিজেদের মধ্যে মারপিটের মতো জঘন্য ঘটনার জন্ম দেয়।
আমরা মনে করি, সামাজিক ও রাজনৈতিক নানা কারণে মানুষের মধ্যে ধৈর্য, সহনশীলতা, সহমর্মিতা কমে যাওয়ায় এখন খেলার সমর্থনের মতো তুচ্ছ বিষয়ে মানুষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ছে। রাষ্ট্র, সমাজ এবং পারিবারিক পর্যায় থেকে নাগরিকদের জন্য বিশেষ করে তরুণদের জন্য বিনোদনের বিকল্প উৎস তৈরি করতে না পারায় তাঁরা এখন খেলা দেখাসংক্রান্ত বিষয়েই বুঁদ হয়ে থাকেন। এসব কারণেই বাগ্বিতণ্ডা থেকে মারামারি, এমনকি হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটে।
পৃথিবীর ফুটবল অনেক দূর এগিয়েছে। এশিয়া, আফ্রিকা এখন উঠে আসছে ভালো দলের তালিকায়। সর্বশেষ বিস্ময় হিসেবে মরক্কো যে খেলা খেলছে, তাতে বিশ্ব ফুটবলে তাদের একটি পোক্ত অবস্থান ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সমর্থকেরা ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মধ্যে যে মধু পেয়েছেন, সেই মধুকে তেতো করে গিলে ফেলার প্রতিযোগিতাকেই জিইয়ে রাখছে মাত্র। ঘুম জেগে খেলা দেখে ইতিবাচক পথে নিজেদের ধাবিত না করে, মারামারির ঘটনায় কেউ কেউ নবজেকে আটকিয়ে রাখছে। যা অশুভই বটে। বলাবাহুল্য যে, মেশি-নেইমারের ঘরে মন্দা নেই, হাজার হাজার মাইল দূরে বাংলাদেশে তাদের আবেগহীন ভক্তদের ঘুম নেই! এ ফুটবল যেনো 'বিশ্বকাপ' না হয়ে হতে বসেছে 'আবেগহীন' চেতনায়। যা নিতান্তই অশনি সংকেতই বটে।
(এম. কে. দোলন বিশ্বাস, দৈনিক সংবাদের সাবেক সহ-সম্পাদক।