পুলিশ এখন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের যাকেই আটক করছে, তাকেই চার মাস আগে হওয়া একটি নাশকতার মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠাচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে মাগুরা বিএনপির পক্ষ থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৭ অগাস্ট নাশকতা সৃষ্টি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনসহ আরও চারটি ধারায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৩৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। মামলাটির বাদী মাগুরা আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ মোল্লা। শহরের ভায়না এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা হয়। বিএনপি নেতারা জানান, মামলার এজহারনামীয় ৩৬ আসামি আদালতে হাজির হয়ে জেলহাজত খেটে সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে এই মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গত ১৩ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মদ ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ অন্তত ২৫ নেতাকর্মী। তারা এখন কারাগারে আছেন। আদালতে দলীয় নেতাকর্মীদের পক্ষে মামলা লড়ছেন জেলা বিএনপির সদস্য শাহেদ হাসান টাগর। তিনি বলেন, “প্রতি রাতেই বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। আর যাকেই আটক করছে তাকেই ২৭ আগস্টের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠাচ্ছে। যে কারণে বিএনপি নেতাকর্মীরা এখন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।“
তবে নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ নাকচ করে সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “পুলিশ এজাহারনামীয় আসামির পাশাপাশি তদন্ত করে যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত শুধু তাদের গ্রেপ্তার করছে। পুলিশ এ পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়, এমন কোনো বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেনি।” মামলা প্রসঙ্গে ওসি আরও বলেন, ২৭ অগাস্ট ভায়না এলাকায় সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও একাধিক বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘাতে বেশ কয়েজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ ঘটনায় আহত সৌরভ মোল্লা নামে এক ছাত্রলীগ নেতা মামলাটি করেন। মামলার ব্যাপারে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আহসান হাবীব কিশোর বলেন, “সরকারবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা ও বোমাবাজি করেছে। এখন মামলা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করা হচ্ছে।” “পুলিশ এখন বিএনপির যাকেই গ্রেপ্তার করছে তাকেই বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়েরকৃত ওই মামলার আসামি হিসেবে আদালতে চালান দিচ্ছে। যে কারণে গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।” অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহার ও দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন মাগুরা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক।