সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে উঠেছে রায়গঞ্জের দিগন্তজোড়া মাঠ। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠে ব্যাপকহারে সরিষা চাষ হয়েছে। শিশির ভেজা সবুজ গাছের হলুদ ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে যেন ঝিলমিল করছে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই হলুদ রঙের ফুলের আচ্ছাদন।
চলতি মৌসুমে রায়গঞ্জে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বা¤পার ফলনের আশা করছেন চাষি ও স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রমতে রায়গঞ্জে ৭ হাজার ৭শ ৪৫ হেক্টর জমিতে এবার সরিষা চাষ করা হয়েছে। এতে টরি-৭, বারি-১৪, বীনা-৯, বারি -১৫, ১৮ জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে বেশি। এসব জাতের সরিষা চাষে সময় লাগে-১১৫- ১২০ দিন। এ মৌসুমে সরিষা চাষে প্রণোদনা হিসাবে ১ হাজার ৫০০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিঘা প্রতি ১ কেজি বিজ, ১০ কেজি ডিএপি এবং ১০ কেজি হারে এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক নাজমুল হক বলেন, ৩ বিঘা জমিতে তিনি সরিষা আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘাপ্রতি তিনি প্রায় ৬-৭ মণ করে সরিষা পাবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবদুর রউফ বলেন, সরিষা আবাদ স¤প্রসারণে কৃষি প্রণোদনা এবং বিভিন্ন প্রদশর্নীর মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। ভোজ্য তেলের উপর আমদানির নির্ভরতা কমাতে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। মাননীয় কৃষি মন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আগামী ৩ বছরে ভোজ্য তেলের উৎপাদন ৪০% বাড়াতে হবে। এজন্য উপজেলায় গত বছরের চাইতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এছাড়াও সরিষার ফলন যেন আরো ১৫% বৃদ্ধি পায় সেকারণে সরিষার জমিতে মৌ-বক্স বসানো হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে সরিষার ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি ঐ জমি থেকে আমরা মধু উৎপাদনও করতে পারবো।
উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মো. গোলাম রব্বানী জানান, এলাকার সব মাঠ মিলিয়ে এবছর ৮জন মৌচাষি ৯৭৬ টি মৌবক্স বসিয়েছেন। বুধবার পর্যন্ত মধু সংগ্রহ হয়েছে ১২.২৫ মেঃ টন। এবছর প্রায় ২৪ মেঃ টন মধু সংগ্রহ হতে পারে বলে তিনি জানান।