চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজণিত রোগ বেড়েছে। হাসপাতাল ও গ্রাম্য চিকিৎসালয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। ঋতু পরিবর্তন হচ্ছে,জেকে বসেছে শীত। হঠাৎ ঠান্ডা পড়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজণিত রোগের পাশাপাশি আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়রিয়ায়। প্রতিদিন গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছেন শিশুসহ বৃদ্ধরা। বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি ও বহিঃবিভাগে ঠান্ডাজণিত রোগের প্রায় শতাধিকের উপরে রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে দ্রুত ভালো হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছেন আক্রান্তরা রোগীর পরিবাররা। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে দেখা গেছে, জরুরী ও বহিঃবিভাগের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক রোগীকে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। অনেকের জ¦র,সর্দি,কাশি, শ্বাসকষ্টসহ পাতলা পায়খানার রোগীর সংখ্যা বেশী। এ ছাড়া পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডসহ শিশু ওয়ার্ডের প্রতিটি বেডেই রোগী ছিল পূর্ণ। রহনপুর পৌর এলাকার আক্রান্ত শিশুর বাবা বাপ্পি জানান, গত তিনদিন আগে তাঁর এক বছরে মেয়ের ঠান্ডাজণিত রোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে এসে ভর্তি করি। চিকিৎসা পেয়ে এখন সে সুস্থবোধ করছে। ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি। রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা শিশু মনিরুল বাবুর মা রওশন জানান, তাঁর সন্তান শ্বাসকষ্ট রোগে ভূগছিল। ছেলেক সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ভর্তির পর চিকিৎসা নিয়ে মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠছে। বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোবজুল জানান, হঠাৎ গত কয়েক দিন হতে পাতলা পায়খানা হচ্ছে। গ্রাম্য চিকিৎসা নিয়ে ভাল হচ্ছেনা তাই হাসপাতালের বড় ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে এসেছি।
জরুরী বিভাগে ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিতে আসা কাওসার আলি (৫৬) বলেন, রাত থেকেই পেটের ব্যথা অনুভব করি। এ সময় পাতলা পায়খানাও হয়েছে কয়েকবার। সকালে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ভর্তি হব বলে তিনি জানান।
গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিনিয়র নার্স লাইলী বেগম জানান, প্রতিদিন ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া,ডায়রিয়াসহ শ্বাসজণিত অনেক রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাঁরা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ডা. এএফএম মাহমুদুর রহমান বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে জ¦র,সর্দি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি রোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিশুদের প্রতি যতœশীল থাকতে হবে। পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হলে শিশুকে মুখে খাবার স্যালাইন বার বার খাওয়ানো ও মায়ের বুকের দুধও খাওয়াতে হবে। এ সময় লেবু জাতীয় খাবার খেতে অনুরোধ জানান।প্রয়োজনে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শসহ সকলকে স্বাস্থ্য সচেতনতা অবলম্বন করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আবাসিক) ডা.সেলিম রেজা বলেন,ঋতু পরিবর্তন হওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহ থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়াসহ ঠান্ডা জণিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া জরুরি ও বহিঃবিভাগ থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিকের উপরে বিভিন্ন রোগের লক্ষ্মণ নিয়ে চিকিৎসা নিতে যান। এর মধ্যে অধিকাংশ ঠান্ডা জণিত রোগ। এ ছাড়া খোলা ও বাসি খাবার পরিহারের পাশাপাশি সবসময় হাত পরিষ্কারসহ গরম পোশাক পরিধানের পরামর্শ দেন। ভর্তিকৃত রোগীরা প্রতিদিন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল আহবান জানান তিনি।