দিনাজপুরের বীরগঞ্জে কৃষকের কাছ থেকে ধান ও মিলারদের কাছ থেকে ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। সংগ্রহ অভিযান শুরুর প্রায় দুই মাস হয়ে গেলেও একবস্তা ধান বা চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। ২৮ ফেব্রুয়ারি এ অভিযান শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এই উপজেলায় সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ার ২ মাস অতিবাহিত হলেও এক কেজি ধান সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। তবে চাল সংগ্রহ হয়েছে ৭২৩ মেট্রিক টন। চলতি অর্থবছরে উপজেলার সুবিধাভোগীদের মাঝে চাল সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে নির্ধারিত বাজার দরের চেয়ে কৃষকের উৎপাদন খরচ ও খোলা বাজারে ধান এবং চালের বাজার দর বেশি হওয়ায় কৃষক ও চাউলকল মালিকরা সরকারি খাদ্যগুদামে ধান ও চাল সরবরাহ করছেন না। শনিবার পর্যন্ত উপজেলার দুটি খাদ্যগুদামে এক কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি। এবং চাল সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৭২৩ মেট্রিক টন। অটো রাইজ মিলসহ চুক্তিবদ্ধ হয়েছে মাত্র ৮০টি মিল। বাকী মিলগুলো চুক্তিবদ্ধ হয়নি। বর্তমানে ধান বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা দরে। উৎপাদন খরচের চেয়ে সরকারি বাজার দর কম হওয়ায় খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের জগদল গ্রামের ধান ব্যবসায়ী মো.রেজাউল ইসলাম জানান,সরকারি বাজার দরের চেয়ে খোলা বাজারের প্রতি কেজি ধান ২ থেকে ৪ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই চলতি মৌসুমে মিল মালিকরা ধান/চাল সরবরাহ করছেন না।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে হলে নিবন্ধন, লটারি, আর্দ্রতা যাচাই, পরিবহন খরচসহ নানা রকমের ঝামেলা পোহাতে হয় কৃষকদের। তাই তারা গুদামে ধান দিতে আগ্রহী না। উপজেলার চালকল মিল মালিক সমিতির সভাপতি বদিউজ্জামান পান্না বলেন,বর্তমান বাজারে চালের কেজি ৫৫ হইতে ৬০ টাকা। অথচ সরকারিভাবে ক্রমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ টাকা। সে কারণে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান,কৃষকের উৎপাদন খরচ ও খোলা বাজারের চেয়ে সরকারিভাবে নির্ধারণকৃত ধান ও চালের বাজার দর কম হওয়ায় ধান ও চাল সংগ্রহ সম্ভব হচ্ছে না। গত অর্থবছরে ১৭ নভেম্বর ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হলেও আজ পর্যন্ত এক কেজি ধান সংগ্রহ হয়নি। চাল সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৭২৩ মেট্রিক টন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয়।