টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে পাগলা মহিষের গুতোয় হাজেরা বেগম (৪২) নামের এক নারী মারা গেছেন। রোববার উপজেলার লাউহাটী ইউনিয়নের তারটিয়া গ্রামে ঘটেছে ঘটনাটি। নিহত ওই নারী তারটিয়া গ্রামের মো. আজগর আলীর স্ত্রী। এ ঘটনায় লাউহাটী ও এলাসিন ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের ঢাকা সহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, রোববার সকাল ১০টার দিকে এলাসিন ইউনিয়নের বারপাখিয়া গ্রামের ঝরু মিয়ার ছেলে মো. শরিফ মিয়ার একটি গৃহপালিত মহিষ আক্রমনাত্মক হয়ে প্রথমে শরিফ মিয়ার উপর চরাও হয়। সিঙয়ের গুতোয় শরিফ মিয়া গুরুতর আহত হন। পরে মহিষটি এলোপাথারী দৌড়াতে থাকে। সামনে যাকে পায় তাকেই আক্রমণ করতে থাকে।
এলাসিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মানিক রতন জানান, পাগলা মহিষের গুতোয় ৩টি গ্রামের অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মালিক শরিফ মিয়ার অবস্থা খুবই গুরুতর। পরে মহিষটি লাউহাটী ইউনিয়নের তারটিয়া গ্রামে চলে যায়।
লাউহাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন মোহাম্মদ খান জানান, মহিষের গুতোয় তারটিয়া গ্রামের হাজেরা বেগম নামের এক নারী মারা গেছেন। তাছাড়া পাগলা মহিষটি লাউহাটী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. হাসমত আলী খান সহ অন্তত ৮-১০ জন ব্যক্তিকে গুতিয়ে আহত করেছে। গুরুতর আহতাবস্থায় হাসমত আলীকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বাহাউদ্দিন সারওয়ার রিজভী জানান, খবর শোনার পর দ্রুত জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. রানা মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে বাংলাদেশ জাতীয় চিরিয়াখানার ট্রাইবুলাইজার টিমকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তারা এসে মহিষটিকে অচেতন করার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু তার পূর্বেই জনতা দাঁ, শাবল দিয়ে কুপিয়ে মহিষটিকে মেরে ফেলে।
দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, একটি পাগলা মহিষ দুইটি ইউনিয়নে একাধিক গ্রামে তান্ডব চালায়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় চিরিয়াখানা থেকে আসা একটি টিম সহ পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। মহিষটি একটি বাড়ীতে ঢুকে তান্ডব চালালে ওই বাড়ীর এক পুরুষ সদস্য প্রাণ বাঁচাতে বাশঝাড়ে গিয়ে উঠে। মহিষটি সেখানে তাকে আক্রমণ করতে গিয়ে বাঁশঝাড়ে আটকে যায়। পরে জনতার হাতে মারা যায় পাগলা মহিষটি।