সনাতন ধর্মালম্বীদের কাছে বিদ্যা, জ্ঞান, বাণী ও সুরের দেবী সরস্বতী। প্রতি বছর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সনাতন ধর্মালম্ভীদের বাড়ী বাড়ী ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশের মধ্যে দিয়ে এ সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
আর এই পূজার প্রতিমা বিক্রির জন্য উপজেলার কালিগঞ্জ, পীড়ারবাড়ী, কান্দি, ধারাবাশাইল, শুয়াগ্রাম, চৌধূরীরহাট, ঘাঘর বাজার, বান্দল, রামশীল, জহরেরকান্দি, ওয়াপদারহাট, নৈয়ারবাড়ি,রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, মনোহর মার্কেট, পশ্চিমপাড়, রাজাপুর, কুশলা, লাখিরপাড় ও হিরণে প্রতিমার হাট বসে। এসব হাট থেকে সানাতন ধর্মাবলম্বীরা সরস্বতী প্রতিমা কিনে নিয়ে পূজা করেন।
আগামী বৃস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
উপজেলার রাঢ়ীর বিল গ্রামের মৃৎশিল্পী অজিত পাল বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলার অন্তত ২০ টি স্থানে শত বছর ধরে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসে। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা এসব হাটে প্রতিমা বিক্রি করতেন। আমরাও প্রতিমা তৈরী করে এসব হাটে বিক্রি করছি। এখানের প্রতিটি হাটে আমাদের তৈরী প্রতিমা বেশ বিক্রি হয়। এই প্রতিমা বিক্রি থেকে আমাদের আয় হয়।
তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলের সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও ঘরে ঘরে এ পূজা করে থাকে। এ কারণেই প্রতিটি হাটেই প্রতিমার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ সকল হাটে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন সাইজের প্রতিমা বিক্রি হয়।
পশ্চিমপাড়া গ্রামের নির্ঝর চক্রবর্তী বলেন, আমরা প্রতি বছর আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা করে থাকি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আমরা বাড়িতে পূজা করবো। এজন্য উপজেলার ঘাঘর বাজার থেকে ১হাজার টাকা দিয়ে একটি সরস্বতী প্রতিমা ক্রয় করেছি।
কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আশুতোষ দাস বলেন, আমরা সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীরা বিদ্যা লাভের আশায় দেবী সরস্বতীর পূজা করে থাকি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও আমরা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজার আয়োজন করেছি। এজন্য আমরা বান্দল গ্রামের পাল বাড়ি থেকে ৫হাজার টাকা দিয়ে একটি সরস্বতী প্রতিমা ক্রয় করেছি। আশা করছি এই পূজার মধ্যে দিয়ে দেবী সরস্বতী আমাদের জ্ঞান দান করবেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী এলাকা। এখানে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্নভাবে সহ অবস্থান করছেন। এ উপজেলায় প্রতিবছর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ঘরে ঘরে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ পূজাকে কেন্দ্র করে ৪/৫ দিন আগে থেকেই উপজেলার প্রায় ২০ স্থানে প্রতিমারহাট বসে। সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশে ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রতিমা কেনাকাটা করেন। কোটালীপাড়ায় ঐতিহ্যবাহী প্রতিমার হাটগুলো আরো শত শত বছর টিকে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।