পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলা সদর ইউনিয়নের কুমারখালী বাজার সংলগ্ন দেবলাল চক্রবর্তীর বাড়ির কালীমন্দিরে অনুষ্ঠিত হলো শতবর্ষের চিতাই পিঠা উৎসব। শনিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজারো নারী পুরুষ এ উৎসবে অংশ নেয়। রোববার সকাল ১০টায় এ পিঠা উৎসব শেষ হয়। সরেজমিন দেখা যায়, কালীমন্দিরের মাঠে সারিবদ্ধভাবে ১০৮টি মাটির চুলা তৈরি করা হয়েছে। আর চুলার উপর এবং পাশে রাখা আছে চিতাই পিঠা তৈরির সারঞ্জামদী। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা এ পিঠা তৈরিতে অংশ নেন। এছাড়াও ওই বাড়ির উঠানে থাকা একটি পুরনো বট গাছের নীচে বসে ১০টি চুলায় পিঠা তৈরি করছেন কালীমন্দিরের দশ পূজারি। উৎসবে তৈরি পিঠা দিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীদের আপ্যায়ন করা হয়ে। কালীমন্দিরে পুরোহিত দেবলাল চক্রবর্তী জানান, প্রায় শত বছর আগে তাদের পূর্ব পুরুষ হরিষত আনন্দ চক্রবর্তীর এ উৎসবের আয়োজন করেন। এরপর থেকে প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা আসেন। বিভিন্ন মনোবাসনা পূরণ হলে ভক্তরা তাদের মানত পালন করতে এখানে আসেন। তিনি আরও জানান, ‘প্রতি বছর মাঘ মাসের অমাবস্যা তিথিতে সন্ধ্যায় বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ চিতাই পিঠা উৎসব শুরু হয়ে চলে সারারাত এবং পরের দিন সকালে খিচুড়ি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়। গোপালগঞ্জ থেকে আসা রনজিত শিকদার জানান, এই কালী মন্দীরে একটি মানত পূরণের জন্য পিঠা উৎসবে এসেছি। এ মন্দিরের নামে মানত করলে মনের আশা পূরন হয়। এ ব্যাপারে নাজিরপুর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার ফৌরদাউস লুনা জানান, এটি এই অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। প্রতি বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এখানে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আর এ উৎসবে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো নারী পুরুষ অংশ নেয়।