ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিদেশ পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রনি মিয়া নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নামে সম্প্রতি মানব পাঁচার আইনে ঝিনাইদহ আদালত ও কালীগঞ্জ থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। রনি উপজেলার ভাটাডাঙ্গা গ্রামের আলতাব একমাত্র হোসেনের ছেলে। সম্প্রতি সে দুবাই থেকে দেশে আসলে পুলিশ তাকে আটপক করে।
রনির বিরুদ্ধে করা একটি মামলার বাদি আবির হোসেন। আবির কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন কাশিপুর গ্রামের আবদুস সাামাদের ছেলে। আবির হোসেন দুবাই যাওয়ার জন্য প্রতারক রনি মিয়ার কাছে দুই কিস্তিতে চার লাখ টাকা প্রদান করে। এরপর ১৬ মে ২০২২ তারিখে আবিরকে দুবাই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যাওয়ার আগে সেদেশের একটি কোম্পানীতে এ্যালুমেনিয়াম ফিটিংসের কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও কোন কাজ না দিয়ে একটি বদ্ধ ঘরে আটকিয়ে রাখা হয়। পরে জানতে পারে তাকে ৩ মাসের একটি টুরিষ্ট ভিসায় দুবাই আনা হয়েছে। তার সাথে আরো দুই যবককে দুবাই নিয়ে যায় প্রতারক রনি। বাকি দু’জন হলো কালীগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের রিপন হোসেন ও একই জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার কাগমারি গ্রামের হাফিজুর রহমান। তাদের তিনজনকে ৮৫ দিন সেদেশের একটি বদ্ধ ঘরে আটকিয়ে রাখার পর দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বিদেশ ফেরত আবির হোসেন জানায়, দুবাই যাওয়ার পর রনি আমাদের বিমানবন্দর থেকে নিয়ে একটি শহরের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আমাদের রেখে বাইরে যেতে নিষেধ করার পরামর্শ দিয়ে বলে কাজ পেলে তোমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু দিনের পর দিন পার হয়ে গেলেও কোন কাজ তো দুরের কথা পরিবারের কাছে বিভিন্ন সময় বয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করতে তাকে। এ সময় আমরা বাংলাদেশ থেকে পাঠানো টাকায় পাশের একটি হোটেল থেকে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে ছিলাম। পরে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্লেন ভাড়া এবং মুক্তিপণ বাবদ পাঁচ লাখ তুলে দেওয়া হয়। পরে আমাদের বাড়ি থেকে টাকা পাঠানোর পর প্লেন টিকিট কেটে ০৭/০৮/২০২২ ইং তারিখে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিদেশ গিয়ে টাকা আয়ের পরিবর্তে পরিবারের সহায় সম্বল হারিয়ে পথে বসার অবস্থা। দেশে ফিরে টাকা ফেরত পেতে জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন সুরাহা না হওয়া আদালত মামলা করি। সম্প্রতি রনি দেশে আসলে পুলিশ তাকে ১৮.০১/২০২৩ তারিখ গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরন করে।
কালীগঞ্জ থানার এসআই প্রকাশ ঘটনার সত্যতা সিকার করে জানান, মানব পাঁচার আইনে করা একটি মামলায় প্রতারক রনিকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছি। তার সাথে আরো কয়েকজন জড়িত আছে যাদের আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।