পাবনার সুজানগরের নাজিরগঞ্জ এবং রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া নৌ-পথে প্রয়োজনীয় যানবাহন সংকটের কারণে ফেরি চালানো নিয়ে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ হতাশ হয়ে পড়েছেন। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় যানবাহনের অভাবে নির্দিষ্ট সময়ে ফেরি চলাচল না করায় আগেভাগে ঘাটে এসে হাজির হওয়া যানবাহনকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান খান জানান, ইতঃপূর্বে ওই নৌ-পথে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নিয়ন্ত্রিত ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি চলাচল করতো। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে নদী পথের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো সমৃদ্ধ করার লক্ষে ইউটিলিটি (ছোট) ফেরির পরিবর্তে চলতি মাসের ২তারিখে বিআইডব্লিউটিসি নিয়ন্ত্রিত দু’টি কে-টাইপের তিনতলা বিশিষ্ট বড় ফেরি সার্ভিস চলাচল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। তবে যে উদ্দেশ্যে ছোট ফেরির পরিবর্তে বড় ফেরি সার্ভিস চালু করা হয় শুরুতেই সেই উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। বিআইডব্লিউটিসি’র নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটের স্টাফ জাহিদুল ইসলাম জানান, বড় ওই ফেরিতে প্রতি ট্রিপে ভারি এবং মাঝারি যানবাহন মিলে কম পক্ষে ১৫/১৬টি যানবাহন পার হতে পারে। এক্ষেত্রে ফেরি পারাপারের জন্য কমপক্ষে ১০টি যাবাহন প্রয়োজন হয়। কিন্তু উদ্বোধনের পর থেকেই ফেরিতে যানবাহন সংকট চলছে। নাজিরগঞ্জ এবং ধাওয়াপাড়া উভয় ঘাটে প্রতি ট্রিপে ৫/৬টি যানবাহনের বেশি পাওয়া যায়না। আবার ওই ৫/৬টি যানবাহনের জন্যও ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। বগুড়া থেকে আলু নিয়ে বরিশাল যাওয়ার উদ্দেশ্যে নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটে আসা ট্রাক চালক আরিফুল ইসলাম বলেন ঘাটে ফেরি থাকলেও প্রয়োজনীয় যানবাহন না পাওয়ায় ফেরি ছাড়েনা। একই কারণে ফেরি চলাচলের নির্দিষ্ট কোন সময়ও নেই। ফলে আগেভাগে ঘাটে আসা ১/২টি পণ্যবোঝাই ট্রাক বা অন্য যানবাহনকে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়। এতে সড়ক পথের চেয়ে নৌ-পথে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের রাস্তা ১২০কিলোমিটার কম হলেও তার কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা। ট্রাক চালক আবদুল কাদের বলেন নাজিরগঞ্জ এবং ধাওয়াপাড়া ঘাটে কোন আবাসিক সুবিধা নেই। তাছাড়া ফেরিতে উঠানামার রাস্তা অত্যন্ত সরু এবং ঝুঁকিপূর্ণ। এমনকি ঘাটে যানবাহন পার্কিংয়ের প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা নেই। সেকারণে এ নৌ-পথে বিশেষ করে পণ্যবাহী যানবাহন আসতে চায়না। ফলে এমতাবস্থায় বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ ওই নৌ-পথে ফেরি চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি’র ম্যানেজার (বাণিজ্য) সাফায়াত আহম্মেদ বলেন বড় ফেরির জন্য ঘাটের রাস্তা প্রশস্ত করণের পাশাপাশি হাই-ওয়াটার ও লো-ওয়াটার ঘাট নির্মাণ করা জরুরী। বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি রাস্তা প্রশস্ত এবং হাই-ওয়াটার ও লো-ওয়াটার ঘাট নির্মাণের মাধ্যমে ঘাটটি সময়োপযোগী হলে যানবাহন বেশি পাওয়া যাবে।