বিএনপির সংসদ সদস্য পদত্যাগ করায় শূন্য হওয়া বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনের উপণ্ডনির্বাচন বুধবার। এই আসনে কে হাসবেন শেষ হাসি-সেটার আলোচনা চলছে দুই উপজেলার মানুষের মুখে মুখে। তবে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা প্রার্থীসহ দুই উপজেলা বাসীর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই আসনটি ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির দখলে ছিল। ২০০৮ সালে বিএনপির জেডআইএম মোস্তফা আলী ১ লাখ ৩১ হাজার ৪১৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম মহাজোটের (জাসদ) প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম নৌকা প্রতীকে ভোট পান ৭৫ হাজার ৯৯১। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। এই নির্বাচনে একেএম রেজাউল করিম তানসেন মশাল প্রতীক নিয়ে ২২ হাজার ২০৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। রেজাউল করিম তানসেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির কাছে হারলেও এবারের উপণ্ডনির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।
বগুড়া-৪ আসনে উপণ্ডনির্বাচনে নয়জন প্রার্থী থাকলেও আলোচনায় রয়েছেন চারজন। এরমধ্যে একজন জেলা জাসদের সভাপতি সাবেক এমপি একেএম রেজাউল করিম তানসেন। তিনি ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মশাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন নন্দীগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সাবেক বিএনপি নেতা কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল। তিনি কুড়াল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। আরেক জন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুশফিকুর রহমান কাজল। তিনি ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। পিছিয়ে নেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত আশরাফুল হোসেন হিরো আলম। তার প্রতীক একতারা। তরুণ ও নতুন ভোটারদের মুখে মুখে হিরো আলমের নাম আলোচনায়।
উপণ্ডনির্বাচনে অন্য প্রার্থীরা হলেন- কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন মোস্তফা কামাল (লাঙ্গল), জাকের পার্টির আবদুর রশিদ সরদার (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির তাজ উদ্দিন মন্ডল (ডাব), বিএনপি নেতা এ্যাড. ইলিয়াস আলী (কলার ছড়ি) ও গোলাম মোস্তফা (দালান) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিএনপির শূন্য হওয়া এই উপণ্ডনির্বাচনে নয় প্রার্থী থাকলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এই আসনে কোন প্রার্থী দেয়নি। যার কারণে ত্রি-মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। শেষ মুহুর্তে নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই আসনের উপণ্ডনির্বাচন। তবে বুধবার রাতেই জানা যাবে নির্বাচনের ফল। কে হাসবেন শেষ হাসি ?
নির্বাচন অফিস সুত্র জানায়, এই আসনে ১১২ টি কেন্দ্রে ইভিএমএ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ৫৮ টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। বগুড়া-৪ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন। এরমধ্যে কাহালু উপজেলায় ৯০ হাজার ৯৬৩ জন নারী ও পুরুষ ভোটার ৮৯ হাজার ৮৮০ জন। নন্দীগ্রামে ৭৪ হাজার ৪৭১ জন নারী ও পুরুষ ভোটার ৭৩ হাজার ১৫৫ জন। এই আসনে নারী ভোটার বেশি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম। প্রতিটি কেন্দ্রে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এর জন্য সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে।