হঠাত করে গত কয়েকদিনের ঘণ কুয়াশার কারণে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার অধিকাংশ পানবরজের পান হলুদ বর্ণ হয়ে ঝড়ে পরছে। এ কারণে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন পানচাষীরা। আগৈলঝাড়ার উৎপাদিত পান দেশ ছেড়ে বিদেশের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পান চাষীরা জানিয়েছেন, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ২৯০ হেক্টর জমিতে পান চাষের সাথে ৩ হাজার ৫৫০ জন পান চাষী জড়িত রয়েছেন। পাশাপাশি এ পেশার সাথে জড়িত রয়েছেন কয়েক হাজার পরিবার। এ সকল পরিবারের একমাত্র উপার্জন হয় পান বরজ দিয়ে। অল্পদিনে পান বাজারজাত করতে পারায় অনেকেই পান চাষে আগ্রহী হয়ে ফসলী জমিতে মাটি ভরাট করে পান বরজ করেছেন।
উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামের পান চাষী খোকন চন্দ্র দে বলেন, আমার ৭০ শতক উঁচু জমিতে ৩৭৫ খানা পান বরজ রয়েছে। শীতের পূর্বমুহুর্তে কার্ত্তিক মাস থেকে চার মাস পান বরজের লতায় পান রাখা হয়। শীতের সময় ওই পান বেশী মূল্যে বিক্রি করা হতো। কিন্তু এবারের প্রচন্ড ঘণ কুয়াশায় বরজের পান হলুদ বর্ণ হয়ে ঝড়ে পরেছে। যেকারণে আর্থিকভাবে আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ঘণ কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে পান বরজের চারিদিকে পলিথিন টানিয়ে পান রক্ষার চেষ্টা করেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
ঢাকা শ্যামবাজারের আড়ৎদার ও বিদেশে পান রপ্তানী কারক প্রতিষ্ঠান ভাইভাই পানের আড়ত এর স্বত্তাধীকারি আগৈলঝাড়ার বাসিন্দা মো. মজিবর ফকির বলেন, বরিশাল আঞ্চলের উৎপাদিত পান খেতে খুব সু-স্বাদু হওয়ায় সবখানে বরিশালের পানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, বরিশালের উৎপাদিত পান ঢাকা, লাকসাম, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করা হয়। পাশাপাশি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বরিশালের পান কুয়েত, সৌদিআরব, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, বাহরাইন, কাতার, স্পেন, ইতালী, লন্ডনসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হয়।
একারনে আগৈলঝাড়ার বিভিন্নস্থানে একাধিক পাইকারী পানের আড়ত গড়ে উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, আগৈলঝাড়ার উৎপাদিত পান বর্তমানে এক থেকে তিনশ’ টাকা পর্যন্ত প্রতিবিড়া (৭২টি) পান বিক্রি হচ্ছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর বসু বলেন, ঘণ কুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্থ পান বরজ পরিদর্শন করে চাষীদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষীদের তালিকা প্রনয়নের কাজ চলছে। সরকারীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষীদের জন্য কোন বরাদ্দ আসলে তা পান চাষীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।