হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে থাকা আদানি গ্রুপের শেয়ার মূল্যে আজ আবারও বড় ধরণের ধস নেমেছে। এতে আদানি গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট শেয়ারমূল্য কমেছে প্রায় ৯২ বিলিয়ন ডলার। গতকাল এর পরিমাণ ছিল ৭২ বিলিয়ন ডলার। এছাড়াও সপ্তাহের ব্যবধানে গৌতম আদানি ব্যক্তিগত সম্পদ হারিয়েছে ৪০ বিলিয়ন ডলার। এর ফলে ফোর্বসের বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকার ৩ নম্বর থেকে ছিটকে গিয়ে তিনি অবস্থান করছেন ১৬তম অবস্থানে। এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বুধবার বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ নির্ধারিত সময়ে বন্ধ হওয়ার কিছুক্ষণ পূর্বে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারের মূল্য ৩০ শতাংশ পড়ে যায়। এরমধ্যে আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ার মূল্য গতকালের পর আবারও ১০ শতাংশ কমেছে, যার ফলে বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জকে বাজার খোলার পর পরেই স্টকটিতে লেনদেন স্থগিত করতে হয়। প্রসঙ্গত, নিউইয়র্কভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ গত সপ্তাহে এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কর্পোরেট জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজির অভিযোগ আনা হয়। তাদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার জালিয়াতি, কারসাজি করে শেয়ারের দাম বৃদ্ধিসহ তাদের ঋণের পরিমাণ ও তাদের ট্যাক্স হেভেন ব্যবহার নিয়েও তথ্য প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। এই ঘটনার পর পরই আদানি গ্রুপের শেয়ার বাজারে বড় ধরণের ধস নামে। যদিও আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে তাদের ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করা হয়। বলা হয়, এটা শুধু নির্দিষ্ট কোনো সংস্থার উপর আক্রমণ নয়, বরং ভারতের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা, অখ-তা ও গুণমান এবং ভারতের উন্নতি ও স্বপ্নের উপর হামলা এটা। আদানি গ্রুপ অভিযোগ করেছে, হিনডেনবার্গ ভারতের ব্যবসায়িক নিয়ম বা আইনগুলো ভালোমত জানে না। তাই তারা বিষয়গুলো বুঝতে পারছে না। এর জবাবে জবাবে হিন্ডেনবার্গ বলেছে, আমাদের কাছে প্রতারণা মানে প্রতারণাই, এটাকে জাস্টিফাই করার সুযোগ নাই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ আদানি গ্রুপ গত কয়েক বছরে অস্বাভাবিকভাবে ফুলেফেঁপে উঠেছে। পৃথিবীর শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ৩ নম্বরে উঠে আসেন গৌতম আদানি। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের পর আদানি গ্রুপে শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়ায় তিনি শীর্ষ ধনীর তালিকার ৩ নম্বর অবস্থান হারিয়ে প্রতিদিনই নেমে যাচ্ছেন।