প্রিয় নীলাদ্রী তুমি কেমন আছো?
প্রতিদিনের মত খাচ্ছো-দাচ্ছো-ঘুমাচ্ছো তো?
রোজকার মত পড়াশুনা চলছে তো?
ভার্সিটিতে অ্যাসাইনমেন্ট ঠিকমত জমা দাও?
আমি প্রতিদিনের মত বারান্দায় বসে
ফেসবুক,টুইটারে,ম্যাসেঞ্জার,হো
বেকার সময় গুলো কাটাই।
তুমি ক্যান্টিনে অথবা ক্যাফেলায় আগের মত আড্ডা দাও?
তোমার ওখানে কত নতুন বন্ধু হয়েছে।
কত কত বন্ধু হবে আরো!
আজ আমি তোমার থেকে বহু দুরে।
ইচ্ছে ছিলো রেল লাইনের মতো সমান্তরালে চলবো পাশাপাশি কিন্তু হলো কই?
তোমার স্বপ্নগুলো ছিলো নস্টালজিক
আমার চিন্তাগুলো ছিলো ডানপিটে
উদ্ভট চিন্তাগুলো এখনো ঘুরপাক খায়
ছেলে মানুষি করি মাঝে মাঝে।
সিগারেটের নিকোটিনের স্বাদ পাবার নেশা
এখন আরো বেড়ে গেছে টেনশনে টেনশনে।
এখন ভাবি একটা চাকুরি পেলে খুবই ভালো হত
ঘরে অসুস্থ বাবা মা,ছোট বোনটি খুব দ্রুত বেড়ে উঠছে।
আগের মত কেনো জানি নেই আমি
বদলে যেতে হয়েছে অনেকটা
পরিস্থিতে বদলে যায় মানুষ।
তুমিতো দিব্যি ঘুরছো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে,ক্যাফেটেরিয়া
আর আমি!ভাবলে বিষন্ন জমে বুকে
আচ্ছা ভাবোতো কতটা আবেগী ছিলাম
কথা গুলো মনে পড়লে হাসি পায় আমার।
একদিন বলেছিলে রুদ্র আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা
সেদিন বলেছিলাম আমিয়ো।
অথচ আজ দুজন দজনকে ছেড়ে খুব ঠিক আছি
তুমি হয়তো ভুলেই গেছো আমাকে
নীলাদ্রি পৃথিবীর মানুষ গুলো সবাই আবেগী।
জানো,এখন আমার সময় কাটে খুব টেনশনে
ছেলে মানুষের জীবন বড় দায়িত্বের
তুমি ভার্সিটি শেষ করেই হয়তো
ভালো জব পাবে,ভালো একটা বর পাবে।
বিন্দাচ একটা লাইফ হবে।
আর আমি কোনো দোকানের কর্মচারী
গ্যারেজের ম্যানেজের হবার জন্য চাকরি খুঁজচ্ছি।
সেইতো আমি এক দিন তোমায় কথা দিয়েছলাম
নীলাদ্রি দেখো আমি একদিন ডাক্তার হবো
তুমি ভার্সিটি,ওকালতি কোনো কিছুর চিন্তাই করোনি
শুধু হতে চেয়েছিলে বিউটি পার্লারের বিউটিশিয়ান।
দেখো আজ কতটা ভালো অবস্থানে গেছো
মানুষের সব কিছুতে একটা ভাগ্য লাগে
নীলাদ্রি,তুমি ভালো থেকো, খুবখুব ভালো থেকো।
এক বসন্তে পাখিরা উড়ে আসবে
অরুনিমার চোখে আমার থাকবে চোখ।
কবিতার ভাষায় কথা হবে
প্রেম উল্লাসের গল্পশ্লোক।
আবার তীব্র শীতে উড়ে যাবে অতিথী পাখি
তবুয়ো অরুনিমার দিকে দৃষ্টি অগোচরে
চেয়ে থাকবো অকারণ।
হয়তো কোনো এক দিন আমাকে মনে পরবে না আর
মনে না পরতে পরতে ভুলে যাবে।
কখনো স্মৃতির ক্যাভাসে খুঁজবেনা জানি
বিবেক তারনা দেবেনা হয়তো।
জানি ভুলে যাওয়া মানুষের স্বভাব
ভুলে যেতে হয়।
স্বার্থের মধ্যে ভালোবাসার গোপন রহস্য লুকানো
তবুয়ো বিনাস্বার্থে লড়ে গেছি তোমাকে পাবার জন্য
যত অসম্মান, আর আঘাত পেয়েছি
সব কিছু তুচ্ছ করে এগিয়েছি তোমার দিকে
যদি কেউ এই স্বার্থহীনকে ভালোবাসে।
ভালোবাসেনি কেউ ভালোবাসেনা,অবহেলিত
হয়েছি বারবার।
পৃথিবীতে রুপ যৌবন আর যোগ্যতাই যখন কাছে আসার মূলমন্ত্র ঘর বাঁধার স্বপ্ন,
তখন অকারনে বিচ্ছেদ আর ব্যাভিচার মন্দ কোথায়?
আমি জানি তুমি কখনো আমার হবেনা
তবুয়ো ছুটেছি তোমার পেছনে,
যেমনটা আলেয়ার পেছনে ছুটে মরুর তৃষ্ণার্ত পথিক।
ভালোবাসা আমার কাছে এখন দেবতার আর্শীরবাদ নয়,অথবা স্বর্গ থেকে দেয়া উপঢৌকন
আমার কাছে যাস্ট অভিশাপ!
কোনো,কোনো প্রেম এমন হয়
নীরবে থেকে যায় ঝিনুকের মত
কিছু প্রেম মুক্ত হয়ে গহনা হয়
কিছু,কিছু মনের ভাষা অব্যাক্ত থাকে।
কেউ কেউ চিৎকার করে বলতে চায়
অথচ সাহস তাদের নেই
বুক পকেটে রাখা ফুল
এভাবেই শুকায়।
কোনো কোনো মানুষ এভাবেই অচেনা হয়
মরে যায় শীতের কুয়াশায় ঝাপসা ভোরে
তবুয়ো বুক ফুলে বলতে পারিনি
বলা হয়ানা অনেক কথা।
আমাদের প্রেম গুলো কত সচ্চ!
করোতোয়ার জলের মতো;
কত উষ্ণ,কত উর্বর পলির মত
কেউ কাউকে আগে চিনিনা
প্রথম পরিচয়েই ভালোলাগে।
এই যে তোমাকে ছেড়ে বহুদুরে আছি
তোমার কি মন খারাপ হয়না অমিতাভ?
জানো,আমার হয়।দেখো আর কোনো
যোগাযোগ নেই খোঁজ নেই
আমি তোমার নিউজফিড প্রতিদিন পাই
কিন্তু সেখানে আর আমাকে খুঁজে পাইনা
লাইক অথবা কমেন্ট করার সাহস হয়ে উঠেনা আর।
বলো কি করবো অমিতাভ!আমারোতো ইচ্ছে ছিলো
তোমাকে নিয়ে সারাজীবন পার করে দিতে
ইচ্ছে ছিলো তোমার সম্রাজ্যের শাসন আমি
মাথা পেতে নেবো।
হয়তো আমাদের রাজজোটক ভাগ্যে ছিলোনা।
তোমার জন্য কত ওয়েট করলাম,
বাবাকে বোঝানোর মত একটা চাকুরি জোগাড় করতে পারলেনা অমিতাভ।
অনার্স সেকেন্ড ইয়ার থেকেই বাবা আমার জন্য ছেলে খুঁজচ্ছিলো
কত অজুহাত দেখিয়ে বাবাকে আটকিয়েছি।
শেষে এসে যে এমনটা হবে আমার জানাছিলোনা অমিতাভ।
ভাগ্য কতটা নিঠুর,যাকে চায় তাকে পায়না
যাকে পায়না তাকেই চায়।
জানি অমিতাভ তুমি আমাকে মনে মনে অনেক দোষারোপ করেছো
কিন্তু কি করার ছিলো বলো?তোমাকেতো বলেছিলাম
আমাকে নিয়ে পালিয়ে যাও।
কিন্তু তোমার সাহস হোলোনা,বাবাকে মুখের উপর কিছু বলার স্পর্ধা আমার নেই।
অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিলাম!
যখনি ফাঁস দিয়ে ঝুলতে যাব তখনি
ভেতর থেকে কান্নায় ভেঙ্গে পরলাম!
এই সুন্দর পৃথিবীর মায়া সহজে কেউ ত্যাগ করতে পারেনা অমিতাভ,আমি সেদিন বুঝেছিলাম।
জানি এতোদিনে তুমি অনেক বদলে গেছো।
হয়তো মনে পরেনা আর আমাকে,মনে রাখিয়োনা।
আমিয়ো রাখতে চাইনা।
শুধু বাঁচতে চাই অমিতাভ,এখন নিজেকেই ভালোবাসতে চাই।