প্রতিনিয়ত কারণে-অকারণে ঘরে-বাইরে শব্দদূষণ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে করে মানুষ দিন দিন বধির হয়ে যাচ্ছেন। হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো, উচ্চৈঃস্বরে নাচ-গান, মাইক বাজানো, ভবন নির্মাণ, কলকারখানা, দোকানসহ নানাভাবে শব্দদূষণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইন থাকলেও অনেকে না জানার কারণে বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিচ্ছেন। পুলিশে অভিযোগ করলেও খুব একটা প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে শব্দদূষণ মানুষের জন্য দৈনন্দিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পরিবেশ অধিদপ্তর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন পরিবেশবিদরা এ কথা বলেন। তারা বলেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতা না থাকায় তারা ঘরে-বাইরে শব্দদূষণ সৃষ্টি করছেন। অনেকে এসব শব্দে অভ্যস্ত হওয়ায় সেটিকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিচ্ছেন। শব্দদূষণ করা আইনি অপরাধ। এর জন্য সর্বনিম্ন এক মাস থেকে ছয় মাসের জেল ও জরিমানা হতে পারে তা অনেকে জানেন না বলে প্রতিনিয়ত শব্দদূষণ হচ্ছে। এজন্য মানুষের সচেতনা তৈরি ও আইনি প্রয়োগে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বানও জানার তারা। অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাফা) যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। এ সময় খোদেজা নাসরিন বলেন, বর্তমানে মানুষ অনেক এগিয়ে যাচ্ছেন। তারা শব্দদূষণ বিষয়ে সচেতন হচ্ছেন। সড়কে শব্দদূষণ প্রতিরোধে ট্রাফিক পুলিশকে আরও বেশি প্রশিক্ষিত করতে হবে। সব দূষণের ক্ষতিকর বিষয়গুলো মানুষের সামনে নানাভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি। আলমগীর কবির বলেন, গত ২৫ বছর ধরে শব্দদূষণ ও পরিবেশ রক্ষা নিয়ে কাজ করা হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। শব্দদূষণের কারণে মানুষ বধির হয়ে গেলেও তা বুঝতে পারছে না। মানুষ ঘরে-বাইরে নানা ধরনের দূষণের মধ্যে পড়ছেন। দেশের ৬৪ জেলার কোথায় কী পরিমাণে শব্দদূষণ হচ্ছে সে সংক্রান্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। তারা সব স্থানের শব্দের ডেসিবল বা পরিমাণের তথ্য সংগ্রহ করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়েছে। জরিপের কাজ শেষে প্রতিবেদন তুলে ধরা হবে বলেও জানান আয়োজকরা।