ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা যুবদলের সেক্রেটারী রকিবুল হাসান খান রাসেলের ফের গ্রেপ্তার খবর শুনে তার বৃদ্ধ শিক্ষক বাবা আবদুল আউয়াল খান (৭৫) স্ট্রোকে মারা গেছেন বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছেন। রোববার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে ওই ছেলেকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে একদিনের জন্য মুক্তি পেয়ে বাবার নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
আবদুল আউয়াল খানের ছেলে আরিফ হাসান খান জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় ভালুকা সরকারি কলেজের সামনে থেকে তাঁর বড় ভাই রকিকুল হাসান খান রাসেলকে আটক করে পুলিশ। রকিকুল হাসান খান রাসেল ভালুকা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। ছেলে রকিবুলের আটকের বিষয়টি জানতে পেরে মা বাসায় কান্না-কাটি শুরু করেন। এর আগেও রকিবুল একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু তাদের মা এতোটা ভেঙ্গে পড়েননি। তখনও রকিবুলের বিষয়টি জানানো হয়নি তাদের বাবাকে। কিন্তু একপর্যায়ে পরের দিন জেনে ফেলেন অবদুল আউয়াল। এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাৎক্ষণিক তাকে ময়মনসিংহের সিবিএমসিবি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক পরীক্ষার পর জানতে পারেন অবদুলল আউয়াল ব্রেইন স্ট্রোক করেছেন। এর আগেও তিনি একবার স্ট্রোক করেছেন। এরপর সন্ধ্যায় ওই হাসপাতালেই আবদুল আউয়ালের মৃত্যু হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে দলের একাধিক নেতার সঙ্গে যুবদলের নেতা রকিবুল হাসান গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ৫১ দিন কারাগারে থাকার পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান তিনি। এরপর গত শনিবার রাতে আবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, শনিবার দিবাগত রাতে ভালুকা-পারুলদিয়া সড়কের পনাশাইল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাঙচুর করছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁরা পুলিশকে বাঁধা দেন। তখন ঘটনাস্থল থেকে যুবদলের নেতা রাকিবুল হাসান খান রাসেল ও আতাহার আলীকে আটক করে পুলিশ। পরে আটক দু’জনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ এবং ১৭৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে রোববার ভালুকা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম মামলা করেন।
তবে পুলিশের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে ভালুকা উপজেলা বিএনপি ও রকিবুলের পরিবার। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু জানান, রাতে তাঁদের কোনো কর্মসূচি ছিলো না। দিনের বেলা শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা। উপজেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনকে আটক করে মিথ্যা ঘটনা সাজানো হয়েছে।