সঞ্চয়পত্র থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে গেছে। পাশাপাশি আগে কিনে রাখা সঞ্চয়পত্রও বিক্রি করে দিচ্ছে মানুষ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছেন। আর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ৯ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা বা ২০ ভাগ। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারী নারীরা বিপাকে পড়েছে। আর ব্যাংকে আমানতের সুদ বাড়লে ভবিষ্যতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি আরো কমবে। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করাসহ বিভিন্ন কারণে চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথমার্ধে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমেছে। বিক্রিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র ভাঙার পরিমাণ বেড়েছে। সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মেয়াদে ৪০ হাজার ৪৭১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হলেও বিনিয়োগকারীরা ৪৩ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র ভেঙেছেন বা নগদায়ন করেছেন। ওই ৬ মাসে বিক্রির নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। বœ আগের অর্থবছরের (২০২১-২২) একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) বেশি বিক্রি হয়েছিল ৯ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। ওই সময়ে মোট বিক্রি হয়েছিল ৫০ হাজার ৬০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। চলতি অর্থবছর নতুন বিনিয়োগ কমে গেছে। কারণ পুরনো বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তির পরে পুনরায় বিনিয়োগ করছে না। কারণ সরকার চলতি অর্থবছরে ৫ লাখ টাকার বেশি অর্থের সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করেছে। এ নিয়ম সঞ্চয়পত্র বিক্রির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও যাদের করযোগ্য আয় নেই তাদের জন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া একটি ঝামেলা। তাই তারা সঞ্চয়পত্র কিনতে নিরুৎসাহী হচ্ছেন। এদিকে এ বিষয়ে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শাহ আলম জানান, টিআইএন সনদ পাওয়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় সমস্যা নয়। কিন্তু আয়কর রিটার্ন দেয়া তাদের জন্য সমস্যা। কারণ অনেকেরই নিজস্ব আয় নেই। অনেক নারী যখন কোনো উৎস থেকে তহবিল পান, ওই তহবিল দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে তারা এখন বিপাকে পড়েছেন। এখন ব্যাংকেও সুদহার কম। ব্যাংকগুলো যদি ভালো সুদ দেয় ভবিষ্যতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি আরও কমে যাবে।