ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে আবু তাহের নামের এক এনজিও কর্মীকে রাতের আধাঁরে নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় আটকের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় কতিপয় বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধি ওই নারীর ইজ্জতের মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে রফাদফার অভিযোগ ওঠেছে। তবে পুরো টাকা ওই নারীর কাছে না পৌঁছার বিষয়টিও চাউর হচ্ছে চারিদিকে। উপজেলার অরূয়াইল ইউনিয়নের রানীদিয়া গ্রামে গত বৃহস্পতিবার রাতে এ কান্ড ঘটেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ফিল্ড অফিসার (পিও) আবু তাহেরকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কথা স্বীকার করেছেন শাখা ব্যবস্থাপক এনায়েত কবির। অভিযুক্ত পিও কে অফিসিয়ালি বরখাস্থ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, রানীদিয়া গ্রামের জনৈক সৌদী প্রবাসীর স্ত্রী ৪ সন্তানের জননীর (৩০) সাথে ব্র্যাক অফিস অরূয়াইল শাখায় প্রথম পরিচয় পিও আবু তাহেরের। আবু তাহের এই শাখায় কাজ করছেন আড়াই বছর ধরে। ওই নারী ঋণ নিয়েছেন। ঋণের কিস্তি উত্তোলন করতে ওই নারীর বাড়িতে নিয়মিত যেত তাহের। দিনের বেলায় যাওয়া আসা করাকালে কেউ সন্দেহ করেনি। কিন্তু গত ২৩ ফেব্রƒয়ারি সন্ধ্যার পর রানীদিয়া গ্রামে যায় পিও তাহের। স্থানীয়রা তাহেরকে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরের আশপাশ দিয়ে ঘুরতে দেখেন। এতে করে গ্রামবাসীর সন্দেহ হয়। তাহেরকে ফলো করকে কয়েকজন যুবক। রাত গভীর হলেও তাহেরকে গ্রাম থেকে যেতে দেখেনি কেউ। একসময় গ্রামের চারিদিকে তাহেরকে খুঁজতে থাকে যুবকরা। কোথাও পাওয়া যায়নি। তাদের সন্দেহ আরো ঘনিভূত হয়। রাত দেড়টার দিকে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরের দরজায় কান লাগিয়ে তারা পুরূষ লোকের গলার শব্দ শুনতে পায়। দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে ওই নারীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় আবু তাহেরকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। স্থানীয় লোকজন তাকে কিছু উত্তম মাধ্যম দেয়। রাতেই অরূয়াইল শাখার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মুঠোফোনে বিষয়টি করলেও রাতে আসেননি তারা। ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগে যান স্থানীয় কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্য। তাহেরকে কর্তৃপক্ষের হাতে বুঝিয়ে দেন। পরের দিন শুক্রবার ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শরীফ মিয়া, ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. উমর আলী ও সাবেক ইউপি সদস্য ইসলাম উদ্দিন মিলে ওই নারীর ইজ্জতের মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। আবার পুরো টাকাটা ওই নারী না পাওয়ার বিষয়টিও চাউর হচ্ছে রানীদিয়া থেকে অরূয়াইল পর্যন্ত। টাকার ভাল একটা অংশ বিভিন্ন জায়গায় ভাগ বাটোয়ারার খবরও চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। এ বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য উমর আলীর মুঠোফোনে (০১৬২৮-৪৭৬২০০) একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। অভিযুক্ত পিও আবু তাহেরের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও (বন্ধ ছিল) কথা বলা সম্ভব হয়নি। শাখা ব্যবস্থাপক এনায়েত কবির ঘটনার সত্যতা প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করে বলেন, ঘটনা জানা মাত্র জেলা থেকে শুরূ করে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক তাকে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন। কারণ আমাদের প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের। অর্থ ও নারী কেলেংকারীর কোন ঘটনায় অফিস কখনো ছাড় দেয়নি। এলাকার শরীফ মেম্বার সাবেক বর্তমান কয়েকজন মেম্বার আমাদেরকে নিয়ে গেছেন। আমার উপস্থিতিতে সামাজিক ভাবে তারা বিষয়টি নিস্পত্তি করেছেন। কিন্তু টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে তাহের মাফ চেয়েছে। অরূয়াইল ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা বিট অফিসার এস আই নুরূল করিম বলেন, বিষয়টি আমরা পরে জেনেছি। ঘটনাটি মনে হয় স্থানীয় ভাবে শেষ হয়েছে। আমাদের কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।