নীলফামারীর সৈয়দপুরে স্বর্ণের চালান আটক যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আধিদপ্তরের অভিযানিক দলের। জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের স্বর্ণ চালান আটককারী অভিযানিক দলের সদস্য সিপাই মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। পরে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এরপর থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আধিদপ্তরের ওই দলের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ নীলফামারী জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম।
এজাহারে জানা যায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি নীলফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর গোপন সংবাদ পেয়ে রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের কামারপুকুর নামক স্থানে যায়। সেখানে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৪-৪১৯১) নাবিল পরিবহনে অভিযানিক দলটি তল্লাশী চালায়। এ সময় ওই গাড়ী থেকে ২০টি স্বণের বারসহ দু’জনকে আটক করা হয়।
২৩ দশমিক ৯৬ ক্যারেটের স্বর্ণের বারের প্রতিটির ওজন ১১৬ দশমিক ৬৬ গ্রাম। এ ২০টি স্বর্ণের ওজন ২ হাজার ৩শ ৩৩ দশমিক ২০ গ্রাম। যার বাজার মুল্য ২ কোটি টাকা। স্বর্ণ চোরাচালানের সদস্য ঢাকা মানিকগঞ্জ জেলার সিঈাইর উপজেলার গোবিন্দল ইউনিয়নের মোঃ সমন আলীর ছেলে আবদুর রহিম (২৫) ও নুরু উল্লাহ’র ছেলে মোহাম্মদ উল্লাহ (২৬)।নীলফামারী মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক বিরোধী অভিযানে পরিদর্শক শফিকুল ইসলামের নের্তত্বে:সৈয়দপুর উপজেলার সহকারি কমিশনার ভুমি মোঃ আমিনুল ইসলাম, নীফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন, উপপরিদর্শক মোঃ এনামুল হক ,সহকারী উপপরিদর্শক আবদুল মোতালেব মৃধা ,সিপাই মেহেদী হাসান ,শামিম, শাওন,নুর ইয়াছিন মুজাহিদ,জিয়াউর রহমান ,রবিন্দ্র নাগ, গাড়ী চালক আবুল কালাম আজাদ অংশ নেয়।
অভিযান শেষে নীলফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানিক দলের পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম সৈয়দপুর থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন:এ অভিযান পরিচালনাকালে সৈয়দপুর উপজেলার সহকারি কমিশনার ভুমি মোঃ আমিনুল ইসলাম,নীফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
ওই দুই কর্মকর্তার ঘটনাস্থলের উপস্থিতি এজাহার নজরে পড়লে: ভুল সংশোধনে মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম ৯ দিনের মাথায় সৈয়দপুর থানায় এজাহার ভুল বর্ণনা শুদ্ধকরণে ১৯ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ডায়েরী করেন। জিডি ট্রাকিং নং ৪২১১ এফ ইউ,জিডি নং১২৩৬,।
এ ঘটনায় বিষয়টি নিয়ে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়। ফলে নীলফামারী মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাই মেহেদী হাসানকে সৈয়দপুর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করলে,অভিযানিক দলের সদস্যদের মাঝে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করে।
এ-সংক্রান্ত বিষয়ে নীলফামারী মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন,ঘটনাটি ঘটে সকাল ৭ টা ৩০ মিনিটে আমি খবর পাই সকাল ১০টায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। এরপর ১২ টা ৪০মিনিটে সৈয়দপুর থানায় আমি ও সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মোঃ আমিনুল ইসলাম উপস্থিত হই। মামলা সংক্রান্ত কার্য্য সম্পাদন করে উদ্ধারকৃত ২০টি স্বর্ণের বারসহ আসামীদ্বয়কে সৈয়দপুর থানায় সোপর্দ্দ করা হয়।মামলার তদন্ত কর্মকতা সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম,:এ প্রতিবেদককে বলেন,আটক স্বর্ণের চোরাচালন সদস্য আবদুর রহিম,মোহাম্মদ উল্লাহ ও রেয়াজুল ইসলাম আদালতে জবানবন্দি কালে স্বীকার করেন: ঢাকা থেকে ৩০টি স্বর্ণের বার নিয়ে নাবিল পরিবহনে পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। সৈয়দপুর কামারপুকুরে নীলফামারী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক বিরোধী অভিযানে স্বর্ণের চালনসহ দু’জনকে আটক করে। তাদের কাছে তল্লাশী চালিয়ে ২০ টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করে। এ সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাই মেহেদী হাসান তাদের কাছে থাকা ১০ স্বর্ণের বার কেড়ে নিয়ে আত্বসাৎ করেন।
এ তথ্যের ভিত্তিতে সিপাই মেহেদী হাসানকে সৈয়দপুর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মামলার গতির প্রশ্নের জবাবে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, তদন্তে র স্বর্থে আরো কেউ জড়িত হবে কি-না তা এই মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বলেন,স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।