শুক্রবার সকালে পৌরসভার অবৈধভাবে টোল আদায়কারীর এক সদস্যকে আদায় থেকে নিবৃত করলেন স্থানীয় এমপি মেজর জেনারেল (অবঃ) বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার নাসির উদ্দিন। এমনটাই জানালেন ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা। ঝিকরগাছা পৌরসভার দরিদ্র জেএসএ, ইজিবাইক, ইঞ্জিন চালিত ভ্যান রিক্সা চালকদের প্রতি পদে পদে চাঁদা দিতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। পৌরসভা থেকে লাইসেন্স না করাই জেএসএ চালক বশিরের গাড়ি শুক্রবারে পৌরসভা জব্দ করেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন। এ সকল যানবাহনের ট্যাক্স কমানোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগীরা জানান - শুক্রবার সকালে পৌরসভা কর্তৃক নিয়োগকৃত চাঁদা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অবঃ) ডাক্তার বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী একাধিক চালক খুব খুশি হয়েছেন বলে তারা অভিব্যক্তিতে জানিয়েছেন। শনিবার সকালে থানার মোড় এলাকার ট্রাক ড্রাইভার আমির আলী জানান, শুক্রবার সকালে এমপি সাহেব থানার মোড় থেকে পৌরসভার নিয়োগকৃত টোল আদায়কারী পুরন্দরপুরের রিফাজকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেন।
জে এস এ চালক সমিতির সভাপতি ওসমান গনি জানান - ঝিকরগাছা পৌরসভার মধ্যে জেএসএ প্রতি ৩ হাজার টাকা, ইজিবাইক প্রতি ২ হাজার ৬০০ টাকা এবং মোটর চালিত ভ্যান রিক্সা প্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে লাইসেন্স নিতে হয়।
একাধিক জেএসএ চালক জানান, যারা পৌরসভার ট্যাক্স না দিয়ে গাড়ি চালায় তাদেরকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। এ সকল চাঁদা আদায়কারীদেরকে শুক্রবার সকালে স্থানীয় এমপি এ কাজ থেকে নিবৃত করেন।
জেএসএ চালক সমিতির জনৈক নেতা নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, যে সকল গাড়ি বাইরে থেকে পৌরসভার ভেতরে আসে, পৌরসভার চাঁদা আদায়কারী সদস্যরা তাদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ৮০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে।
শনিবার সকালে জেএসএ চালক বশির উদ্দিন জানান, পৌরসভা থেকে জেএসএ চালানোর লাইসেন্স না করায় আমার গাড়ি শুক্রবার সকালে পৌরসভা জব্দ করেছে। তিনি বলেন এটা দুঃখজনক। আমি সংসার চালাবো কিভাবে।
জেএসএ চলক জলাল উদ্দিন জানান, আমি ৩ হাজার টাকা পৌরসভার ট্যাক্স দিয়ে গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেয়েছি। ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ট্যাক্স ধরলে ভালো হয়।
কলাগাছি গ্রামের ইজিবাইক চালক সুশান্ত জানান, ইজিবাইক এর লাইসেন্স করতে ২ হাজার ৬০০ টাকা দিয়েছি। সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা হলে ভালো হয়।
ইঞ্জিন চালিত মোবারকপুরের ভ্যানচালক হেদায়েত আলী বলেন, ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে লাইসেন্স করেছি। আমাদের মত গরিবদের এত টাকা জোগাড় করা খুব কষ্টের কথা। ৫০০ টাকা ট্যাক্স হলে ভালো হয়।
এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, তারপরেও সংসার নিয়ে টানাটানি, এরমধ্যে চাঁদা দিতে দিতে সংসার চালানো একপ্রকার কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের এই দুরবস্থা দেখে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, এতে আমরা খুব খুশি হয়েছি। আমাদের দাবি পৌরসভা ট্যাক্স কমানো জন্য মাননীয় সংসদ সদস্য কার্যকরী ব্যবস্থা নেবেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার নাসির উদ্দিন এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
ঝিকরগাছা পৌরসভার মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল জানান, তারা পৌরসভার আইন মোতাবেক কাজ করছিল, তারা সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিয়োজিত ছিল।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা জানান,
এমপি মহোদয় পৌরসভার নামে চাঁদা আদায়কারীকে চাঁদা আদায় থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন।
পৌরসভার সচেতন নাগরিকদের দাবি ঝিকরগাছা পৌর সদরের ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে একাধিক ব্যবসায়ী। এদেরকে উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র মোস্তফা আনার পাশা জামাল জানান, রোজার আগেই এদেরকে উচ্ছেদ করা হবে।