ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফের পীরে কামেলে মোকাম্মল হযরত শাহসূফী আলহাজ¦ সৈয়দ আবদুস ছাত্তার নকশে বন্দী(রঃ) ও পীরে কামেলে মোকাম্মেল হযরত শাহসূফী সৈয়দ নাছিরুল হক (মাসুম) নকশে বন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রঃ) দ্বয়ের বার্ষিক ইছালে ছওয়াব উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী ফান্দাউকের সভা আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। রোববার বাদ ফজর নামাজের পর আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন ফান্দাউক দরবার শরীফের গদ্দীনিশীন মাওলানা সৈয়দ ছালেহ আহ্মাদ (মামুন)।ফান্দাউক দরবার শরীফের সভায় লাখো মুসল্লির অংশগ্রহনে মুখরিত প্রায় ৩৫ মিনিট মোনাজাতে মুসলিম উম্মার ঐক্য কামনাসহ দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্যের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে দেশ প্রেমিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে পরম করণাময় আল্লাহর দরবারে শান্তি কামনা করা হয়। ইমান ও ইসলাম নিয়ে বাচাঁর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয় এবং কাদিয়ানীকে অমুসলিম ঘোষনার দাবি জানানো হয়। মহান রাব্বুল আলামিনের গুণগান,কুরআন ও হাদিস থেকে শান্তির ধর্ম ইসলাম সর্ম্পকে গুরুত্বপূর্ণ এবং সঠিক জীবন বিধান নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ও ওলামাগণ মূল্যবান আলোচনা পেশ করেন। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বদরুদ্দোজা মোঃ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপিসহ মাহফিলে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিদের আগম ঘটে।
উল্লেখ্য,মাহফিলে দরবার শরীফের আওতায় পরিচালিত প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ফান্দাউক মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার ৫জন ছাত্রকে পাগড়ি প্রদান করা হয়। এছাড়াও মাহফিলস্থলে ফান্দাউক দরবার শরীফের ছোট সাহেবজাদা সৈয়দ বাকের আহমদকে(আকদ)বিবাহ পড়ানো হয়। ব্রাহ্মনবাড়িয়ার প্রত্যন্ত জনপথ নাসিরনগরের ফান্দাউক।এ গ্রামে দু‘দিনব্যাপী মাহফিলের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় শুক্রবার জু‘মার নামাজ বাদ।এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল। মাহফিল উপলক্ষে প্রায় ১৫ দিন ধরে সামিয়ানা টানানো হয়। বিশাল প্যান্ডেল টানানো হয় আশেকানদের জন্য। বন(খড়)বিছিয়ে হাজার হাজার ভক্ত মুরিদান বসে বয়ান শুনেন।তাদের সুবিধার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। একজন ডাক্তারের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন পল্লী চিকিৎসক নিয়োগ দেয় দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ ব্রাহ্মনবাড়িয়া,হবিগঞ্জ,কিশোরগঞ্জ,ভৈরব,আশুগঞ্জ,নাসিরনগরসহ বিভিন্ন স্থ্ান থেকে লাখো মানুষের সমাগম ঘটেছে।চারশতাধিক শৌচাগার নির্মান করা হয়। ৫ হাজার লোক এক সাথে খাবার খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিশাল এলাকা জুড়ে প্যান্ডেল নির্মান করা হয়। আর এর পুরোটাই করা হয় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে।এক পাশ থেকে অন্যপাশ দেখা যায় না। সভাকে ঘিরে অস্থায়ী ভিত্তিতে ছোট বড় কয়েক‘শ দোকান-পাঠ গড়ে উঠে।দূরের আশেকানদের থাকার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। ফান্দাউক পন্ডিত রাম উচ্চবিদ্যালয়ের কক্ষ গুলোতে ছিল বেশ কিছু অতিথি।এ সভাকে ঘিরে এলাকার লোকজনের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়।প্রতিবারের ন্যায় এবারও লাখো মুসল্লির অংশগ্রহনে মূখরিত ফান্দাউক দরবার শরীফ।