লক্ষ্মীপুর পৌরসভার তিনবারে নির্বাচিত সফল মেয়র, জেলা আ.লীগ থেকে দুইবার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের আর নেই। শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে শহরে অবস্থিত নিজস্ব বাসভবনে মেয়র তাহের ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮০ বছর। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী এ বীর মুক্তিযোদ্ধা অনেক দিন থেকে ফুসফুস ক্যান্সারে ভোগছিলেন। তিনি স্ত্রী, তিন পুত্র এবং দুই কন্যা-জামাতা, নাত-নাতনীসহ বহু আত্মীয়-স্বজন, সহযোদ্ধা, রাজনৈতিক সহকর্মী রেখে যান। ১৯৫৩ সালের ৮ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর বাঞ্ছানগর এক মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। তার পিতার নাম মরহুম আনোয়ারুল হক। তিন ছেলে সন্তানের মধ্যে মেঝা ছেলে একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা যুবলীগ সাবেক সভাপতি।
তিনি এলাকায় বহু ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তাঁর নামাজে জানাযা আগামীকাল রোববার সকাল ১১টায় লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। পরে শহরে অবস্থিত জালালিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন নিজ হাতে গড়া কবরস্থানে লাশ সমাহিত করা হবে। এক সময়ে সারাদেশে আলোচিত ব্যক্তি ছিলেন, মেয়র এম এ তাহের। তার একক ক্ষমতায় গোটা জেলার রাজনীতি পরিচালিত হতো। ২০২২ সালের পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে তিনি রাজনীতি থেকে একরকম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। এরপর শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২০০০ সালে তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সারা দেশে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার প্রথম পাতা এবং শেষ পাতার শিরোনাম সংবাদ পরিবেশিত হয় গডফাদার তাহের নামে। এক নামে সারাদেশে তার খ্যাতি এবং অখ্যাতি নিয়ে তাঁর পরিচিতি ছিলো। গোটা জেলা তাঁর একক ক্ষমতার নিয়ন্ত্রনে ছিলো। কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে সাথে ছিলো তাঁর গভীর সম্পর্ক। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে লক্ষ্মীপুরে প্রভাবশালী এক নেতা ও নক্ষত্রের পতন ঘটলো।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেঁতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল এবং জেলা আ.লীগ সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু এবং সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি। তাঁর মৃত্যুতে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মরহুমের লাশের পাশের্^ হাজারো মানুষের ঢল নামে।