এ যেন এক অন্যরকম মানুষের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার শিক্ষা। তারা অসহায়, দরিদ্র মানুষ। গায়ে ছেঁড়া জামা, কেউ বাক প্রতিবন্ধী, কেউবা চোখেও দেখেনা। তাদের আয় প্রতিদিনি ১শত টাকা থেকে কারো কারো দেড়শো দুইশত টাকা পর্যন্ত হয়। ওইসব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নিজের অফিসে বসে ইফতার করেছেন কালীগঞ্জ থানার ওসি এটিএম গোলাম রসূল।
সোমবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানায় বসে পথচারী, অসহায়, দরিদ্র ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের সঙ্গে ইফতার করে তার দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। এ সময় নিজের বেতনের টাকা থেকে তিনি ঈদ বোনাস হিসেবে তাদেরকে কিছু নগদ অর্থও দেন।
এদিকে চকচকে ফকফকে ওসির রুমে দরিদ্র মানুষের সঙ্গে ইফতার করা নিয়ে অনেকেই প্রশংসা করছেন। তারা বলছেন, এভাবে গরিব মানুষের পাশে তারা থাকলে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।
ইফতারে অংশ নেয়া অসহায় ব্যাক্তিরা বলেন, আমি এভাবে কোনদিন ইফতার করিনি বা কোনদিন আমার সৌভাগ্য হয়নি। ওসি সাহেব আমাদের এভাবে যতœ করে ইফতার করাবেন ভাবতেই পারছি না। আল্লাহ ওনাকে সুস্থতা দান করুন উনি যেন সব সময় সুস্থ্য থাকেন। তারা আরো বলেন, খাওয়া শেষে ওসি সাহেব আমাদের নগদ টাকা দিয়েছেন যেটি দিয়ে নতুন জামাসহ অনেক কিছু কিনতে পাবো।
কালীগঞ্জ থানার ওসি এটিএম গোলাম রসুল বলেন, প্রতিদিনই চোর, ডাকাতসহ বিভিন্ন অপরাধীদের ধরতে মাঠে কাজ করে পুলিশ। কখনো রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ইফতার করেন। কখনো সেই গাড়িতেই পানির বোতল দিয়ে রোজা খুলে কিছু খান। অনেক সময় মন্ত্রী এমপিদের নিরাপত্তার কাজের ক্ষেত্রে ভালো খাবার খাওয়া হয়। কিন্তু সব অসহায় মানুষের সঙ্গে কেউই ইফতার করতে চায় না। মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইফতার পার্টি না করে সাধারণ মানুষের পাশে দাড়ানোর আহ্বান করেন। সেই সামর্থ্য আমার নেই, তাই মাত্র কয়েকজন পথচারী অসহায় দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষকে ইফতার করেছি।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ কখনো মানুষকে খুশি রাখতে পারেনা। তাই অসহায় মানুষ গুলোর সাথে বসে ইফতার করেছি। এ সময় আমার বেতন থেকে প্রত্যেককে ২০০ টাকা করে ঈদ বোনাস দিয়েছি। মাত্র ২০০ টাকা পেয়ে তারা এতটা খুশি হয়েছে এটি বলে শেষ করা যাবে না। তাদের সাথে ইফতার করে মনে হয়েছে আমি হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে ইফতার করেছি।