পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দ্বারা সাংবাদিক নির্যাতন ও হেনস্তার ঘটনায় দুটি সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে। ১০ এপ্রিল নির্যাতনের শিকার ডেইলি সান ও বাংলা টিবিউনের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি আবদুল কাইউম দুমকি ও পটুয়াখালী সদর থানায় পৃথক দুটি জিডি করেছেন। দুমকি থানার জিডি নং-৪০৯, পটুয়াখালী থানার জিডি নং-৫৮১।ঘটনার ৫ দিন পর পুলিশ সাধারন ডায়েরিতে অন্তর্ভুক্ত করলেও কিছু ঘটনা এড়িয়ে গিয়েছেন। এদিকে সাংবাদিকদের উপর হওয়া হামলার ঘটনায় পটুয়াখালী জেলা টেলিভিশন জার্নালিস্ট ফোরাম,জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব,বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা,পটুয়া খেলাঘর আসর, সাংস্কৃতিক সংগঠন সুন্দরমসহ একাধিক সামাজিক সংগঠন প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। পটুয়াখালী জেলা টেলিভিশন জার্নলিষ্ট ফোরামের নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে জানান, সাংবাদিকেদর সাথে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এমন আচরণ স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকী স্বরুপ এবং আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থি। দ্রুত এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আপরাধিদের শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিকে ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে জডিতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যাবস্থা গ্রহনের জোড় দাবি জানান তারা। জিডিতে কাইয়ুম বলেন, গত ৫ এপ্রিল তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে পবিপ্রবিতে সংবাদ সংগ্রহে যান। ওই দিন ভর্তি স্থগীতের ঘটনায় অবস্থান কর্মসূচীতে নামেন সাধারন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ওই অবস্থান কর্মসূচি বন্ধ করতে পবিপ্রবি প্রশাসনের পক্ষ নিয়ে পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক তারেকের নির্দেশে সহ-সভাপতি আশ্রাফুল আলম রুবায়েত, সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব বুখারীসহ অনুসারী ক্যাডার বাহিনি নারী শিক্ষার্থীদের মারধোর শুরু করেন। সাধারন শিক্ষার্থীরা ডাক-চিৎকার করলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংবাদকর্মীরা এগিয়ে মারধোরের ভিডিও ধারন করেন। এ ঘটনায় ক্ষেপে যান তারেক অনুসারীরা। এক পর্যায় সংবাদকর্মী রাকিবুল ইসলাম তনুকে মারধোর করে তার মোবাইল ভেঙ্গে ফেলেন রুবায়েত, শিহাব বুখারীর লোকজন। রাত ১০টার দিকে অবস্থার অবনহি হলে উপস্থিত সাংবাদিকরা দুমকী প্রেসক্লাব চত্বরে অবস্থান করেন। কিছুক্ষন পরে রুবায়েত,শিহাব বুখারী ও তাদের লোকজন কাইউমকে টেনে হিচরে ক্যাম্পাসের ভেতরে নিয়ে যান নেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার সন্তোষ কুমার বসু। সেসময় কাইউমের কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে নারী শিক্ষার্থীদের মারধোরের ভিডিও ডিলেট করে মোবাইল ও ল্যাপটপ ভেঙ্গে ফেলেন ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক তারেকের অনুসারীরা। রেজিস্ট্রারের সামনে দুই ঘন্টা মারধোর ও হেনস্তার এক পর্যায় কাইউমের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে এবং তাকে মারধোর করা হয়নি মর্মে ভিডিও রেখে মধ্য রাতে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
অপরদিকে এসব ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রচার হলে গত ৬ এপ্রিল রাতে কাইউমকে ফোন করে নারীঘটিত মামলার হুমকী দেন ইতঃপূর্বে চেক জালিয়াতির অভিযোগে পবিপ্রবি ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার হওয়া নাঈম হোসেন। নাইম কাইয়ুমকে বলেন-নিউজ না করার শর্তে আপানাকে ছেরে দেয়া হয়েছে। আমি আপনাকে উদ্ধার করলাম। তাদের প্রতিশ্রুতি দিলেন নিউজ হবেনা। তার পরেও নিউজ করলেন, এখন নারী শিক্ষার্থী দিয়ে আপনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও আন্দোলন করলে, তখন আপনি কি করতে পারবেন?। এছাড়াও পবিপ্রবির ছাত্রলীগের শাখার সাধারন সম্পাদক তারেকের পক্ষ নিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবুল বাশার বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে উল্লিখিত ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হবে। একই বক্তব্য দিয়েছেন পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান। তবে মারধোরের ঘটনা গনমাধ্যমে স্বীকার করেছেন দুমকী থানা পুলিশের ওসি আবুল বাশার।