পাবনার সুজানগরে এক সময়ের প্রমত্ত পদ্মা নদী এখন ধুধু বালু চরে পরিণত হয়েছে। এতে নদী হারাতে বসেছে তার অতীত ঐতিহ্য এবং অস্তিত্ব।
উপজেলার নারুহাটি গ্রামের পদ্মাপাড়ের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান বলেন বেশি দিন আগের কথা নয়, প্রচণ্ড স্রোতস্বিনী প্রমত্ত পদ্মার গর্জনে মাঝি মাল্লারা সাহস পায়নি পদ্মার বুকে তার খেয়া নৌকা চালাতে, জেলে সাহস পায়নি তার মাছ ধরা নৌকা চালাতে। এমনকি অনেক সময় পদ্মার বিশাল ঢেউয়ের ভয়ঙ্কর গর্জনের মুখে ফেরি এবং স্টিমারের মতো ভারি নৌযানও চলতে সাহস পায়নি। শুধু তাই না সে সময় পদ্মার প্রচণ্ড স্রােত আর বিশাল বড় বড় ঢেউয়ের গর্জনে পদ্মা পাড়ের মানুষ ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। কিন্তু কালের আবর্তনে সেই প্রমত্ত পদ্মা এখন শুকিয়ে শীর্ণ একটি খালে পরিণত হয়েছে। পদ্মার বুক জুড়ে জেগে উঠেছে ধুধু বালু চর আর বালু চর। উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন পাবনার সাতবাড়ীয়া পদ্মা নদীর খেয়াঘাট হতে রাজবাড়ীর হাবাসপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত পদ্মা নদীর দূরত্ব প্রায় ৬কিলোমিটার। ৪/৫ মাস আগেও দুই জেলার হাজার হাজার মানুষ ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ওই নৌ-পথে খেয়া নৌকায় যাতায়াত করতেন। বিশেষ করে দুই জেলার মানুষ বাণিজ্যিকভাবে সবজি এবং মাছ বেচাকেনার জন্য পদ্মা নদী পারি দিয়ে স্থানীয় হাট-বাজারে যেতেন। কিন্তু মাত্র ৪/৫ মাসের ব্যবধানে দীর্ঘ ৬কিলোমিটার পদ্মা নদীর সাড়ে ৫কিলোমিটার শুকিয়ে ধুধু বালু চর জেগে উঠেছে। আর মাত্র আধা কিলোমিটার পদ্মায় পানি রয়েছে। যে আধা কিলোমিটার পদ্মায় পানি রয়েছে তাতেও কোন বড় এবং ভারি নৌকা চলতে পারেনা। পানি একদম কমে যাওয়ায় শুধু ছোট ছোট নৌযান চলাচল করে। ভুক্তভোগী খেয়া নৌকার যাত্রী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের দুলাল হোসেন বলেন বর্তমানে পদ্মা নদীর সাড়ে ৫কিলোমিটার চর পায়ে হেঁটে আর মাত্র আধা কিলোমিটার পদ্মা খেয়া নৌকায় পার হয়ে পাবনা এবং রাজবাড়ী জেলার অভ্যন্তরে যাতায়াত করতে হয়। এতে খেয়া নৌকার যাত্রীদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা বলেন সহসা বৃষ্টি বাদল না হলে ওই আধা কিলোমিটার পদ্মার পানিও শুকিয়ে যেতে পারে। এতে পদ্মা নদী সম্পর্ণূভাবে তার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলতে পারে।