পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) শীর্ষক ১ম পর্যায়ের বরাদ্দকৃত টাকা তছরুপের পর শুরু হয়েছে ২য় পর্যায়ের কাজ।
প্রথম পর্যায়ে ভুয়া শ্রমিক দেখিয়ে এবং যেনতেন কাজ করে অতি দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা জমা পড়েছে ইউপি চেয়ারম্যান,মেম্বার ও কর্তাদের পকেটে। প্রথম পর্যায়ের মতো দ্বিতীয় পর্যায়েও সরকারি অর্থ তছরুপ শুরু হয়েছে।
অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির ২য় পর্যায়ে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ৪৪টি প্রকল্পের বিপরীতে ২ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৪০ দিনব্যাপী এই প্রকল্পে প্রতিদিন ১ হাজার ৩৩৫ জন শ্রমিক কাজ করার কথা। প্রত্যেক শ্রমিকের মজুরী প্রতিদিন ৪০০ টাকা। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা ভুয়া শ্রমিক দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন বরাদ্দকৃত টাকা।
খোঁজ নিয়ে ও সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা গেছে,অতি দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ তছরুপে এগিয়ে আছে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন। ২য় পর্যায়ে এই ইউনিয়নের ৫টি প্রকল্পে বরাদ্দ ২৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। প্রল্পগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে কাটাখালী,খৈরাশ,পাঁচুড়িয়া,হোগলবাড়িয়া ও দঁথিয়া এলাকায়। এসকল প্রকল্পে প্রতিদিন কাজ করার কথা ১৫৯ জন শ্রমিকের। কিন্তু ৫টি প্রকল্পে ১০০ জন শ্রমিককেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। একটি সূত্র জানায়,এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামীম হোসাইন অর্ধ শতাধিক শ্রমিকের টাকা বিভিন্নভাবে পকেটস্থ করছেন। প্রথম পর্যায়ের মতো দ্বিতীয় পর্যায়েও ৫টি প্রকল্পের অর্ধেক টাকা হরিলুট করা হবে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ডিবিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান শামীম হোসাইনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একই হাল উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নেও। এই ইউনিয়নর ৫টি প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। প্রতিদিন কাজ করার কথা ১৪৬ শ্রমিকের। কিন্তু এ পরিমাণ শ্রমিক পাওয়া যায়নি। প্রকল্পগুলো এ ইউনিয়নের সোন্দভা,পাঁচবাড়িয়া,ধুলাউড়ি,বরুরিয়া ও মৃধাপাড়া। এই অনিয়ম যেন দেখার কেউই নেই। প্রকাশ্যে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হলেও কোন প্রকার তদারকি নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরও কোন মাথাব্যাথা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এস এম শামীম এহসান জানান,কোন অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ১ম পর্যায়ে কাজ না করায় টাকা ফেরত গেছে। এবারও তদারকি করে শ্রমিক না পেলে কোন টাকা দেওয়া হবেনা। তিনি এ বিষয়ে তাঁর দপ্তরে কর্মরত উপণ্ডসহকারী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলতে বলেন।
কর্মসংস্থান কর্মসূচির সরকারি অর্থ কছরুপের বিষয়ে তদন্তপূর্বক দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দূর্নীতি দমন কমিশনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারণ মানুষ।