চার মাস শান্ত থাকার পর ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসের জনপদ খ্যাত মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়ন। গত শুক্রবার রাতে হোসেন্দী গ্রামে মুহুর্মুহু গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটানো হয়েছে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্ক বিরাজ করছে ওই গ্রামটিতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এলাকার কয়েকজন জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচন কে কেন্দ্র করে পরাজিত এবং বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলে আসছে হোসেন্দী ইউনিয়নে। এ সময় সহিংসতায় বেশকিছু ব্যক্তি আহত হয়েছে। অসংখ্য বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। সেখানে বসবাসরত সাধরণ মানুষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খোলার সাহস পাইনা। মুখ খুললেই নেমে আসে ভয়াবহ নির্যাতন। শিকার হতে হয় মামলা ও হয়রানিতে। গত কয়েকদিন ধরেই মুখোমুখি অবস্থানে ইউনিয়নটির বর্তমান চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু ও ইউপি নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মাহবুব মিয়ার সমর্থকরা।
হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুব মিয়ার দাবি বর্তমান চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুর সমর্থক বিএনপি নেতা মাসুম ওরফে কালা মাসুমের নেতৃত্বে ৩০/৪০জন বহিরাগত সন্ত্রাসী তার বাড়িঘর ও ড্রেজারে হামলা করার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে। তবে পুলিশের তৎপরতার কারণে তারা তাদের উদ্দেশ্যে সফল হয়নি।
এদিকে মাসুমের দাবি একসময় তিনি মাহবুব মিয়ার সমর্থক ছিলেন এখন বর্তমান চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুর সাথে তার সুসম্পর্ক হওয়ায় তা মানতে পারছে না মাহবুব। তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মাহবুবের ছোট ভাই সৈকত হোসেন বাবুর নেতৃত্বে গত শুক্রবার রাতে তার বাসার অদূরে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করা হয়। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তার বড় ছেলে নাজমুল হাসান তার মুঠোফোন ঘটনার কিছু অংশ ভিডিও করে রেখেছে। গভীর রাত হওয়ার কারণে অপরাধীদের মুখ দেখা না গেলেও ভিডিওতে তিন-চারটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, ঘটনা যারাই ঘটিয়ে থাকুক আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো আপনারা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
এবিষয়ে গজারিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় উভয় পক্ষেরই দায় রয়েছে। তবে এগুলো গুলির বা ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ নাকি অন্য কিছু তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গত কয়েকদিন ধরে উভয়পক্ষ নিজের শক্তি প্রদর্শনে নানা রকম কাজ করে যাচ্ছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।