ঢাকা মহানগরীতে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। পুরান ঢাকায় এসব ভবন তুলনামূলক বেশি। শাঁখারীবাজারের বেশিরভাগ ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। ভিবিন্ন দুর্ঘটনার পর আমরা আশা করেছিলাম, মহানগরীর সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে ভেঙে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে। ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দূরের কথা, সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পর্যন্ত ভাঙতে পারেনি সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শুধু ঢাকা শহরেই নয়, দেশের অন্যান্য শহরেও আছে। শুধু তাই নয়, এমন ভবনে চলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান, এমনকি আদালতও। যেমন আমরা দেখছি খুলনার কয়রা উপজেলায়। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে সেখানে চলছে আদালতের কার্যক্রম।
অবাক করা বিষয় হচ্ছে ১০ বছর আগে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে গেলে এর দায় কার? উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও সহকারী জজ আদালত ভবনটি ২০১৩ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে গণপূর্ত বিভাগ। এখন বিকল্প জায়গা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে বিচারিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে। ভবনের দেয়াল ও ছাদে ফাটল ধরেছে। ছাদের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে গেছে অনেক আগে। প্রতিবছর তা মেরামতের নামে ঢেকে দেওয়া হলেও বেশি দিন টেকে না। মাঝেমধ্যে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে দলিল ও কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিটি কক্ষের ছাঁদ ও দরজা-জানালা বেহাল। হাজতখানার দরজা-জানালা ভাঙা, শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী।
এছাড়াও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ৪৮ ভবন 'ঝুঁকিপূর্ণ'। এর মধ্যে রয়েছে ৯টি পরিত্যক্ত মার্কেট ভবন; আছে আবাসিক ভবনও। তবু সংস্থা দুটি নড়বড়ে ভবনে মার্কেট ও দোকান খোলা রেখে ব্যবসার সুযোগ করে দিয়েছে। ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের কাছ থেকে করপোরেশন নিয়মিত ভাড়াও আদায় করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ধসে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো উদ্বেগ নেই। ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত একটি ভবনে ডিএমপির বংশাল থানা রয়েছে। এ বিষয়টি আমলে নিয়ে নিরাপদ কোনো ভবনে থানা স্থানান্তরের বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবেন বলে প্রত্যাশা করছি। একের পর এক দুর্ঘটনা তবু টনক নড়ছে না। তাই ব্যক্তি পর্যায়ে অসচেতনতার পাশাপাশি তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলোর গাফিলতিকেই এজন্য দায়ী ও এসব দূর্ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছি। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে এবং সরকারকে এ ব্যপার গুলো খতিয়ে দেখার ও দৃষ্টি আকর্ষণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।