রাজশাহীর বাঘায় বাবার মৃত্যুর পর মায়ের পৌষা গাভীর দুধ বিক্রির টাকায় বড় ছেলে শিক্ষক, ছোট ছেলে প্রকৌশলী ও মেজো মেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী। মায়ের প্রচেষ্টায় এমন স্বাবলম্বী হয়েছে উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের তেনাচুরা বাউসা গ্রামের তিন ভাই বোন।
জানা যায়, উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে তেনাচুরা বাউসা গ্রাম। এই গ্রামে তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে ছকিনা বেগম বসবাস করতেন। ছকিনা বেগমের স্বামী আবদুল খালেক ১৯৯৮ সালে হটাৎ হার্ডস্টোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এ সময় বড় ছেলে জহুরুল ইসলাম সবে মাত্র এইচএসসি পাশ করে রাজশাহী কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হয়েছে। মেজো মেয়ে সাবিনা খাতুন স্থানীয় বাউসা হারুন-অর-রশিদ দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী। ছোট ছেলে জুয়েল আক্তার রাজশাহী ল্যাবরোটালী হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
স্বামীর মৃত্যুতে ছনিকা বেগম তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে নিরুপায় হয়ে মহাবেকায়দায় পড়েন। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। এ সময় একটি গাভী কিনেন এবং স্বামীর রেখে যাওয়া কিছু জমি নিজেই চাষাবাদ শুরু করেন। পাশাপাশি ছকিনা বেগমের মা ছরিমন বেগম পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করেন। গাভীর দুধ বিক্রি করে তিন ছেলে-মেয়েকে স্বাবলম্বী করেন স্বামী হারা মা ছকিনা বেগম।
এ বিষয়ে বড় ছেলে শিক্ষক জহুরুল ইসলাম জানান, বাবার মৃত্যুর পর টাকার অভাবে আমার রাজশাহী কলেজে অনার্স পড়া বন্ধ হয়ে বাড়িতে চলে আসতে হয়। পরে মায়ের প্রচেষ্টায় বাঘা শাহদৌলা কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করে খোর্দ্দবাউসা উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছি।
মায়ের পৌষা গাভীর দুধ বিক্রি টাকা দিয়ে মেজো বোন সাবিনা খাতুন রাজশাহী কলেজ থেকে সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স মাষ্টার্স শেষ করে সোনালী ব্যাংক, রাজশাহী আলুপট্রি শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার গোলাম মোর্তজার সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে সে গৃহীনি।
এ দিকে ছোট ভাই জুয়েল আক্তার রাজশাহী প্রকৌশলী বিশ^বিদ্যালয় থেকে ইলেকটিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্্র ইঞ্জিনিয়ার পাশ করে গ্রামীণ ফোনের ঢাকা হেড অফিসে লিড প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মা আগামী ২৬ মে হজ্জ পালনের জন্য সৌদি আরবে যাবেন। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।