পটুয়াখালীতে বিএনপির ডাকা জনসমাবেশে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। পৃথক এ তিনটি মামলায় পটুয়াখালী জেলা বিএপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টিসহ জেলা-উপজেলা বিএনপির অঙ্গ-সঙ্গঠনের অন্তত ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি সংখ্যায় রয়েছে আরও অন্তত ৬৫০ জন। যে কারণে গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়েছে বিএনপির ৯০ শতাংশ নেতাকর্মী। গত ২১ মে দুপুরে সদর থানায় দায়েকৃত মামলা বাদী হয়েছেন সদর থানায় কর্মরত এসআই বিপুল হালদার। একই দিনে অপর দুটি মামলার বাদী হয়েছেন বিএনপির হামলায় গুরুতর আহত পটুয়াখালী জেলা সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন হাওলাদার এবং অপরটির বাদী হ”েছ বরগুনা জেলার বেতাগীর মাহাফুজুর রহমানের ছেলে রায়হান হোসেন। এদিকে পুলিশের দায়েকৃত মামলায় সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুজনকে আসামি করা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ¯’ানীয় গণমাধ্যকর্মীরা। যদিও এসব প্রসঙ্গে এসপি মো. সাইদুল ইসলাম বলেন-মামলা রজু হওয়াটাই চুড়ান্ত নয়, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যব¯’া নেয়া হবে এবং কোনো নির্দোষ ব্যক্তি অহেতুক হয়রানী হবেনা।
পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি, জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন,বিএনপির প্রয়াত সাংসদ নেতা শাহজাহান খানের ছেলে জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক শিপলু খান,জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি রিমানুল ইসলাম রিমু,জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শফিউল বশার উজ্জল, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. জাকারিয়া আহম্মেদ,সাবেক ছাত্রদল নেতা গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লবসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতের তালিকায় আরও অন্তত আড়াইশ বিএনপির নেতাকর্মী রয়েছেন। এছাড়াও অপর দুটি মামলায় পটুয়াখালী জেলা শ্রমিকদলের সাধারন সম্পাদক মো. মনির মুন্সি, পৌর বিএনপির নেতা মনিরুল ইসলাম সুজনসহ ৪৫ জন বিএনপির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এদুটি মামলায়ও সাড়ে চার“শ অজ্ঞাতনামা রয়েছে।
মামলা প্রসঙ্গে জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি রিমানুল ইসলাম রিমু বলেন-এটি একটি হয়রানী মূলক মামলা। জনগনের দাবি আদায়ের লক্ষে আমাদের রাজপথকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এ মামলায় দিয়ে বিএনপি নয়, জনগনের কণ্ঠো রোধের চেষ্টা করেছেন আওয়ামী লীগ ও পুলিশ। তিনি আরও বলেন-মামলায় অর্ন্তভুক্ত হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তিন মামলায় নাম দেয়া হয়েছে। অথচ ঘটনা একই এবং একই দিনের। এতে স্পষ্টভাবে প্রমানিত যে মামলাটি উদ্দেশ্য প্রোণদিত।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি বলেন-আমাদের শান্তিপূর্ন জনসমাবেশে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীকে মারাত্মক ভাবে আহত করেছে। দিনের আলোয় বিএনপির কার্যালয় ভাংচুর করেছেন। যা জনগন ও পুলিশ দেখেছে। অথচ পুলিশ অসত্য ঘটনাকে প্রাধাণ্য দিয়ে মামলা নিয়েছেন। বিএনপি যাতে আগামীতে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে না পারে, তাই তাদের জেলে ভরে রাখার পরিকল্পনা করেছেন আওয়ামীলীগ। আমাদের জেলে ভরে আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচনের পায়তারা করছেন। কিন্তু দেশের মানুষ সচেতন। তারা তাদের অধিকার আদায়ে একাট্টা হবে। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন-মামলায় যাদের অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে,তাদের মধ্যে অনেকে ওই দিনের সভা¯’লে উপ¯ি’ত ছিলনা। তাই এটাকে আমি গায়েবী মামলা বলবো। আজ এই মামলার জন্য জনগনের পক্ষে কথা বলা মানুষ গুলো ঘর ছেরেছেন। আমরা পুলিশ-প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষতা আশা করছি।
এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. উজ্জ্বল বোস বলেন-বিএনপি একটা জঙ্গিবাদী দল। তারা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনাকে হত্যার হুমকী দিয়েছে। তারা যদি হামলাই না করে তা হলে আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হলো কিভাবে? গত ২০ মে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী বাহিনী আওয়ামী লীগের শন্তির মিছিলে আর্তকিত হামলা করেছেন এবং আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটিয়েছেন। তাই পুলিশ ও ক্ষতিগ্র¯’রা মামলা করেছেন।
প্রসঙ্গত-গত ২০ মে শনিবার পটুয়াখালী জেলা শহরের বনানী এলাকায় বিএনপি জনসমাবেশের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে কেন্দ্রীয় বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা অংশ নেন। ওই সমাবেশে জেলা-উপজেলা থেকে অন্তত ৫ হাজার বিএনপির নেতাকর্মীরা যোগদেন। পরবর্তীতে সরকারদলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে বিএনপির ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষে অন্তত শতাধিক আহত হয়। তবে ওইদিন বিএনপি ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের শূন্য হাতে দেখা যায়নি।