ইদানীং গণমাধ্যমে প্রায়ই খবর আসে নব জাতক চুরি ও বিক্রির ঘটনা। সরকারি হাসপাতালে ও দেশের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক থেকে নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন সেসব সন্তান উদ্ধার করছে। নবজাতক চুরির সাথে যুক্ত, চক্রকে গ্রেপ্তার করছে। কিন্তু নবজাতক চুরির ঘটনা থামছে না। নিঃসন্তান দম্পতিরা এসব সন্তান কিনে থাকেন। নবজাতক সন্তান কেনাবেচার বাজারে ছেলে সন্তানের দাম বেশি। অবশ্য সুন্দর মেয়ে সন্তানের বাজারও খারাপ না। লাখ লাখ টাকায় এসব নবজাতক বিক্রি হয়ে থাকে। শুধু চুরি করা সন্তান নয়, অনেক সময় দরিদ্র বাবা-মা সংসারের বাড়তি খরচ থেকে বাঁচতে নিজ সন্তানকে বিক্রি করে থাকেন।
এবার খবর এসেছে, খেলাধুলা করার সময় এক শিশুকে লজেন্স দিয়ে অপহরণ করে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রির ঘটনা। অবশ্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন এবারো শিশুটিকে উদ্ধার করেছে এবং যথারীতি কেনাবেচার সাথে যুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে গত ২৬ এপ্রিল অপহৃত শিশুটিকে গত ১৮ মে গোপালগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব। র্যাব বলছে, পীযুষ কান্তি পাল একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় স্পা সেন্টারে কাজ করতেন। সেখানে হিৃদ্ধিতা পাল নামের একজনের সাথে পরিচয় হয়। ২০২০ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ওই সেন্টারে কাজ করার সময় মানব পাঁচারে জড়িয়ে পড়ে পীযুষ। গত বছর বনানী থানার এক মানব পাঁচার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি সম্প্রতি জামিনে বের হন।
ফেসবুকের একটি গ্রুপে পীযুষ-হিৃদ্বিতা দম্পতি ‘শিশু দত্তক’ এর বিজ্ঞাপন দেন উল্লেখ করে র্যাব বলছে, সেই বিজ্ঞাপনের সূত্রে সুজন নামের একজনের সাথে পরিচয় হয় এবং টাকার বিনিময়ে শিশু দত্তক দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে হিৃদ্ধিতা। হিৃদ্ধিতা নিজের সন্তানের ছবি সুজনের কাছে পাঠিয়ে গৃহকর্মীর সন্তান বলে পরিচয় দেন। হিৃদ্বিতার ভাষ্য, গৃহকর্মীকে তার স্বামী ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় শিশুটিকে টাকার বিনিময়ে দত্তক দেওয়া আগ্রহ প্রকাশ করে রিদ্বিতা। এরপর দু’পক্ষের মধ্যে সন্তান বিক্রির চুক্তি হয়।
অনেক সময় দেখা যায় অগ্রিম টাকা নিয়ে নব জাতক চুরি করা হয়। সম্প্রতি নবজাতক চুরি ও কেনাবেচার ব্যাপারটি বেড়ে যাওয়ায় এ নিয়ে সমাজচিন্তাবিদরা চিন্তিত। তাই নবজাতক চুরির ঘটনা থামাতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদাসীনতার পরিচয় দিয়ে দায় এড়াতে চেয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে কোনো শাস্তিমুলক ব্যবস্থা তারা নেন নি। এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না। তাই অপরাধীদের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করে নবজাতক চুরির ঘটনা বন্ধ করতে হবে।