রাজশাহীর পুঠিয়ায় মাদক কারবারিদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায়,খুন ছিনতাইসহ বিভিন্ন রকম অপরাধ মূলক কাজের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুঠিয়া এবং বেলপুকুর থানা দুইটিতে মাদকের ব্যবসা রমরমা হচ্ছে। যারজন্য, উঠতি বয়সী কিশোর এবং বেকার যুবকরা মাদকের টাকা সংগ্রহ করার জন্য,অপরাধ মূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ তুলেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিটি মাদককারবারিদের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা জড়িয়ে রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা বলছেন,জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক নেতাদের হাতেনাতে প্রমাণ স্বরুপ তাদের নিকটে মাদক না পাওয়ার গেলে,তাদেরর আটক করা যাচ্ছে না। তাই, উপজেলা জুড়ে হাত বাড়ালেই ফেনসিডিল, ইয়াবা, ইরোইন গাঁজা পাওয়া যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মাদক বিক্রেতা বলছে, থানা পুলিশ এবং মাদকদ্রব্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে চুক্তি করে তারা ব্যবসা করছে। স্থানীয় বলছে, থানা পুলিশ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের সখ্যতা থাকার জন্য বাধাহীন ভাবে ব্যবসা চালাতে পাড়ছে। জানা গেছে, উপজেলার বাণিজ্যিক এলাকা হলো বানেশ্বর হাট। বাঘা-চারঘাট দুই উপজেলা ভারতীয় সীমান্ত এলাকার মাদক কারবারিা বানেশ্বরের ওপর দিয়ে সাধারণত দেশের ভেতর মাদক পাচার করে থাকেন। তাই বানেশ্বরে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাদক দ্রব্য দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। এই এলাকায় বেশ কয়েকজন মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা এই এলাকায় মাদকের রমরমা ব্যবসা করে কোটি টাকার মালিক হয়েছে। উপজেলা সদরের যাদের এক সময়ে কিছুই ছিল না, তারা আজ গাড়ি বাড়ির মালিক। মাদক বিক্রি এলাকাগুলো হলো, পুঠিয়া সদর, ধোপাপাড়া, কার্তিকপাড়া, মোল্লাপাড়া, সাধনপুর, ঝলমলিয়া,শহীদ নাদের আলি কলেজের পাশে,চিতলপুকুিরয়ার আমবাগান,বানেশ্বর কাচারীপাড়া, বিড়ালদহ বিহারীপাড়া, বেলপুকুর থানা এলাকার বগেরটেক মোড়, ডিসির মোড়, ক্ষুদ্রজামিরার রেল লাইনের পাশেসহ একাধিক স্থানে চিহ্নিত কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী আছে। কিন্তু থানা পুলিশ এবং মাদক দ্রব্য কোনো সময়ে তাদের আটক করেন না। মাঝেমধ্যে র্যাব, জেলা ডিবি সদস্যদের চিহ্নিত মাদক কারকারিদের আটক করতে দেখা যায়। উপজেলার বানেশ্বর নামজগ্রাম পূর্বপাড়ায় প্রকাশ্যে মাদকের ব্যবসা করছে,কয়েকজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা। কিন্তু উপজেলার বেশিরভাগ মাদক গডফাদারা ধরাছোয়ার বাহিরে থেকে ব্যবসা চালায়ে আসছে। মাদক ব্যবসা ব্যাপক হওয়ার কারণে, উপজেলা উঠতি বয়সী কিশোর এবং যুবকরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাতেরআধাঁরে গ্রামীণ এলাকায় কিংবা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের হুট করে ছিনতাই করে পালিয়ে যাচ্ছে। তারা শুধুমাত্র মাদক নেশার টাকা সংগ্রহ করার জন্য কাজগুলি করছে। শতাধিক যুবক তাদের কোনো কর্ম নেই। কিন্তু মাদক বিক্রি করে বাইক নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। ১০ মে ঝলমলিয়ার ডাক বাংলার নিকট তারেক নামের এক ক্যাবল কর্মচারী ছিনতাইয়ের শিকার হন। ২২ অক্টোবর উপজেলার সাধনপুর এলাকায় অজ্ঞাত ব্যক্তির ডোবাই লাশ পাওয়া যায়। এখনো পর্যন্ত লাশের নাম পরিচয় এবং রহস্য উদঘাটন হয়নি। ২১ মে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের গাঁওপাড়া নামক ঢালানে ভোর সাড়ে চারটার দিকে চার্জাভ্যানের জন্য চালককে গলা কেটে খুন করে দুবৃর্ত্তরা। অতীতের বেশ কয়েকটি খুন ছিনতাইয়ের ঘটনা আইনশৃঙ্ঘলাবাহিনী রহস্য বাহির করতে পারেননি। সেজন্য, এই এলাকায় এবং অন্য এলাকার দুবৃর্ত্তরা অপরাধ করে নির্বিঘেœ পার পেয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রাকাশ্যে মাদক কেনাবেচা খবর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানালেও এলাকাবাসীরা কোনো রকম উপকার পাচ্ছে না বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কিশোরের অভিভাবকরা জানায়,উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে চিহ্নিত বেশকিছু মাদককারবারিরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মদদে রমরমা ব্যবসা করে আসছে। উপজেলায় কারা মাদক ব্যবসা করে তা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর লোকেরা জানেন। শুধুমাত্র ছোটখাটো মাদক বিক্রেতাদের আটক করা হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে (পুঠিয়া সার্কেল) ইনেস্পক্টর সাইফুল আলম যুগান্তরকে বলেন, মাদক এলাকাগুলিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করে থাকি। তারপর,আটকদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হচ্ছে। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।