আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়া সেই বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেপ্তার করেছে রাজশাহীর পুলিশ। রাজশাহী জেলা ও মহানগর পুলিশ (আরএমপি) যৌথভাবে সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর ভেড়িপাড়া মোড়ে একটি প্রাইভেটকারে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর চাঁদকে নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে আরএমপির সদর দপ্তরে নিয়ে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। পরে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তাকে রাজশাহীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এ হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মাহবুব আলম পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মুসাব্বিরুল ইসলাম।
পিপি মুসাব্বিরুল বলেন, পুঠিয়ার থানার মামলায় আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে নেয়া হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুঠিয়া থানার এসআই সুজন আলী তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছিল। এই গ্রেপ্তার আসামি আবু সাঈদ চাঁদ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা কমিটির আহ্বায়ক। তিনি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। একাধিকবার বিএনপির প্রার্থী হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশও নিয়েছেন।
প্রসজ্ঞত, গত ১৯ মে বিকালে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে চাঁদ বলেন, ‘আর ২৭ দফা ১০ দফার মধ্যে আমরা নাই। এক দফা-শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার জন্য যা যা করার দরকার আমরা করব।’ তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও দুই দিন পর ছড়িয়ে পড়লে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। রাজশাহী জেলা ও মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় তার নামে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বেশকিছু মামলা হয়। আত্মগোপনে থাকা চাঁদকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়ে আসছিল পুলিশ।
বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারের পর দুপুর ১২টায় আরএমপির সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরএমপি কমিশনার আনিসুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ায় রাজশাহীর পুঠিয়া থানায় প্রথম চাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন জানান, বিভিন্ন অপরাধে চাঁদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ২০ থেকে ২৫টি মামলা ছিল। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির ঘটনায় রাজশাহী জেলা ও মহানগরের থানাগুলোতে আরও ৬/৭টি মামলা হয়েছে। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে হুমকির ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় আরো বেশকিছু মামলা হয়েছে। আবু সাঈদ চাঁদ প্রাইভেটকারে চড়ে আত্মগোপনের জন্য কোথাও পালানোর জন্য যাচ্ছিলেন। সে সময় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জেলা ও মহানগর পুলিশ যৌথভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরএমপির সদর জোনের ডিসি, রাজশাহীর এসপিসহ মহানগর ও জেলা পুলিশের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।