ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রায় ৪০৮ পরিবারের বসবাস। একসময় এসব পরিবারের লোকজন অবহেলিত থাকলেও বর্তমান সরকারের নানা সহযোগিতার কারণে তাদের জীবনমান পরিবর্তন হয়েছে। শিক্ষিতের হার বেড়েছে এবং অনেকেরই কর্মসংস্থান হয়েছে।
পরিবারগুলো পর্যায়ক্রমে পাচ্ছে মাথা গোজার ঠাঁই। তারা স্থানীয় মুসলিম পরিবারগুলোর সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের নারগুন গ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের বসবাস। এখানে তারা একটি কমিউনিটি গড়ে তুলেছেন।‘ আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতি মাধ্যমে উপজেলার অধিকাংশ পরিবার সরকারি বিভিন্ন সহায়তা নিচ্ছে। বর্তমানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা সরকারি সহায়তায় বিনা মূল্যে গবাদি পশু, হাঁস ও মুরগি এবং মাছচাষের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ১৫০ পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছেলে ও মেয়েদের শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষা উপকরণ, উপবৃত্তি ও পরিবহন হিসেবে দেড় শতাধিক সাইকেল দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের টিপু কিসকু জানান, ১৯৯৮ সাল থেকে তারা একটি কমিউনিটির মাধ্যমে আছেন। যার কারণে তারা এখন সরকারি সব রকমের সহযোগিতা পান।
নারগুন গ্রামের বাপোই টুডু জানান, একসময় তাদের ছেলে মেয়েদের কয়েক মাইল হেঁটে বিদ্যালয়ে যেত। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সাইকেল দেওয়ায় গত দুই বছর সাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে যায়। তারা খুবই আনন্দিত।
হরিপুর উপজেলার আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি সনিরাম হেমরম জানান, সরকারি সহযোগিতার কারণে তাদের অনেকের মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে। আবার অনেক পরিবারকে নতুন করে ঘর দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তাদের সন্তানরা শিক্ষিত হচ্ছে। এখন সরকারি চাকরির বিষয়ে তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম শরীফুল হক বলেন, একসময় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবারগুলো অবহেলিত ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করায় তাদের জীবনমান অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তাদের বাসস্থান করে দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নাগরিক হিসেবে তাদের মৌলিক চাহিদার ঘাটতি থাকছে না। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে সমাজের মূল স্রোতধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।