‘কথায় বলে চেষ্টার অসাধ্য কিছু নেই’ এমন অদম্য ইচ্ছে শক্তি ও পরিশ্রমের সফল কামাল-মঞ্জিলা দম্পত্তি। খুলনার পাইকগাছায় এ দম্পত্তি'র অতি যত্নের ‘বাদশা’ এখন কোরবানি ঈদের হাটে বিক্রির অপেক্ষায়। উপজেলার রাড়-লী ইউনিয়নের নিকারীপাড়ায় দরিদ্র এ পরিবারের বসত বাড়ির ছোট্ট ভাঙ্গা-চুরো গোয়ালে ৩ বছর ধরে পাকিস্থানী সাহীওয়ালী জাতের এড়ে গরুটি সন্তান স্নেহে বেড়ে উঠেছে। এখন ওজন প্রায় ৫শ কেজি। অতি সৌন্দয্য প্রিয় গরুটিকে দেখতে প্রতিদিন মানুষ আসছে। দক্ষিণ কাঠিপাড়ার কেয়ামত গাজীর ছেলে আবুল কালাম গাজীর সামান্য ভিটেবাড়ি ছাড়া বিলান কোন জমি নেই। কাঠিপাড়া বাজারে ক্ষুদ্র কাঁচামালের ব্যবসা থাকলেও স্ত্রী মঞ্জিলা ও দু'ছেলে নিয়ে অতি কষ্ঠে তাদের সংসার চলতো। একসময় অন্যের দেখাদেখি কালাম-মঞ্জিলা দম্পতি কিছু নগদ টাকা ও ধার-দেনা করে একটি বিদেশী জাতের গাভী ক্রয় করেন। শুরুতে ১টি গাভী থেকে বসত ঘরের উঠানে ভাঙ্গা-চুরো গোয়ালে একে একে ৬টি গরুর জন্ম হয়। এখন ১টি গাভী দুধ দিচ্ছে। এরইমধ্যে ২টি এড়ে গরু বিক্রয় করে পূর্বের দেনা পরিশোধ করে একদিকে সংসার চলছে, অন্যদিকে স্কুল ও কলেজ পড়-য়া দু'ছেলের পড়াশোনার পিছনে ব্যয় হচ্ছে। এরইমধ্যে ৩ বছরের পাকিস্থানী সাহীওয়ালী জাতের একটি এড়ে গরু ডাক নাম বাদশা আগত কোরবানি ঈদের বিক্রির জন্য পস্তুতি নিচ্ছে এ দম্পত্তি। গৃহবধূ মঞ্জিলা বেগম জানান, গোয়ালে বাছুরটি জন্মের পর দেখতে খুবই সুন্দর ছিল বলে আদর করে ‘বাদশা’ নাম রেখেছিলাম। আমার দুটি ছেলে সন্তানের মতো এ পর্যন্ত বাদশাকেও আদর যত্নে বড় করে তুলেছি। ঈদে বাদশাকে বিক্রির কথা শুনে মনে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। চেষ্টা থাকলে উপায় হয় এমন মন্তব্য করে গৃহবধূর স্বামী আবুল কালাম গাজী বলেন, গরু পালনে প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয় ও ডেহরী উন্নয়ন প্রকল্পের ট্রেনিং নিয়েছি। সরকারী সুযোগ সুবিধা পেলে ভবিষ্যতে গরু পালনে আরোও বড় পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেন তিনি। সামনে কোরবানি ঈদে সাহীওয়ালী জাতের গরু ‘বাদশাকে’ বিক্রি করা হবে বলে জানান।