বরিশালের মুলাদীতে হঠাৎ করেই গরুর লাম্ফি স্ক্রিন ও খুড়া রোগ প্রকোপ বেড়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গরুর এই দুটি রোগ ছড়িয়ে পড়ায় খামারি ও কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করছেন খামার মালিক ও সাধারণ কৃষকেরা। ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক গরু এই রোগে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। তবে উপজেলায় লাম্ফি ও খুড়া রোগের আক্রান্ত হওয়ায় বিষয়টি কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শাহপরান। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মুলাদী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ছোট-বড় প্রায় ২১৮ টি গরুর খামার তালিকাভূক্ত রয়েছে। তালিকাভুক্ত খামারগুলোতে গরুর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। এ ছাড়া উপজেলার সকল কৃষকদের ২/৩টি করে গরু রয়েছে। গত ২ সপ্তাহ ধরে উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের চরকমিশনার, বাহাদুরপুর, দক্ষিণ বাহাদুরপুর, নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর, ঘোষেরচরসহ বিভিন্ন এলাকায় গরুর লাম্ফি ও খুড়া রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। চরকমিশনার গ্রামের মো. মোশারেফ হোসেন, নূরে আলম মৃধা, মিজানুর রহমানের গরুসহ কমপক্ষে অর্ধশত গরু মারা গেছে। চরকমিশনার গ্রামের মো. ফোরকান হোসেন জানান, তার খামারে ২৪টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি গরু লাম্ফি ও খুড়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে যোগাযোগ করা হলে কোনো চিকিৎসক খামারে যাননি। ফলে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক দিয়ে গরুর চিকিৎসা চালাচ্ছেন তিনি। বাটামারা ইউনিয়নের খামার মালিক মো. মাকসুদুর রহমান জানান, খামারের ৮/১০টি গরু খুড়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সরকারি ভাবে চিকিৎসা সহায়তা না পেয়ে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের সহায়তায় গরুগুলোকে সুস্থ্য করার চেষ্টা করছেন তিনি। সাহেবেরচর গ্রামের কৃষক মো. আলাউদ্দীন বলেন, ‘২টি গরুর মধ্যে একটি খুড়া রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হাল-চাষ করতে পারছি না। উপজেলা সদরে চিকিৎসার জন্য গিয়ে সেবা না পেয়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনেছি।’ চরকমিশার গ্রামের ইউপি সদস্য মো. শামীম খান বলেন, ওই গ্রামে লাম্ফি ও খুড়া রোগের প্রকোপ ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক গরু ইতোমধ্যে মারা গেছে। খামার মালিক ও সাধারণ কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বাজারের গরুর ওষুদের সংকট রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শাহপরান বলেন, ‘উপজেলায় লাম্ফি ও খুড়া রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই। খামার মালিক ও কৃষকেরা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে এলে তাদের পরামর্শ এবং গরুর সঠিক চিকিৎসা প্রদান করা হবে।’