নওগাঁর পত্নীতলায় সরকার ঘোষিত কারফিউ অমান্য করে সোমবার সকাল থেকেই ছাত্রদের নেতৃত্বে সর্বশ্রেণীর মানুষ রাস্তায় নেমে আসে এবং উপজেলা সদর নজিপুর চারমাথা বাসষ্ট্যান্ড দখলে নেয়। এ সময় তাঁরা সরকার বিরোধী স্লোগান ও শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবীতে এলাকা মুখরিত করে তোলে। বিক্ষোভ চলাকালেই শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে উত্তেজিত জনতা নজিপুর বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থিত আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় তাঁরা আরো কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় স্থানীয় বিএনপি নেতারা উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত্ত করতে চাইলেও ব্যর্থ হন।
সোমবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু করে রাত আনুমানিক ১০টা পর্যন্ত বিক্ষোভকারী উত্তেজিত জনতা বিভিন্ন স্থানে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় তাঁরা নজিপুর বাসষ্ট্যান্ড বণিক কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা কাজী বেন্টুর মোবাইলের দোকান ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পত্নীতলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান জনির মোটর সাইকেলের শোরুমে হামলা করে প্রায় ৬০টি মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পত্নীতলা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গাফফার এর মালিকানাধীন মুগ্ধ স্কয়ার ও মোটর সাইকেলের শোরুম ভাংচুর করে। নজিপুর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মনোয়ার হোসেন সাগর এবং নজিপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মিলটন উদ্দীনের বাসায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। নজিপুর পৌর মেয়র রেজাউল কবির চৌধুরীর বাসায় অগ্নিসংযোগ ও ২টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। নজিপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মজিদের অফিসে অগ্নিসংযাগ ও বাসায় ভাংচুর চালায়। পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল খালেক চৌধুরী এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য আজাদ রহমানের বাড়িতে ভাংচুর চালায়। পত্নীতলা উপজেলা পুঁজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক দিলীপ কুমারের দোকানে ভাংচুর চালায়।
উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় নজিপুর সরদার পাড়া মোড়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর মুল্যাল এবং নজিপুর চারমাথা বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থিত নৌকার প্রতীক বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া উত্তেজিত জনতা দুপুর ১২টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতা ও সমর্থকদের প্রায় ১০/১৫টি দোকানপাট ভাংচুর করেছে বলে জানা গেছে।