সাধারণত প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষরা চিকিৎসা সেবায় সুযোগ সুবিধাতে পিছিয়ে থাকেন। এই পিছিয়ে থাকা থেকে প্রান্তিক মানুষ যেন চিকিৎসার আওতায় আসতে পারে, সে দিক বিবেচনায় সরকার প্রত্যেকটি জেলায় জেলায় কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছেন। এতে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষরা স্বাস্থ্যে সেবায় অনেক উপকৃত হচ্ছেন। এমন স্বাস্থ্যে সেবা যেন সবসময় পাওয়া যায় এমনটাই প্রত্যাশা গ্রামবাসীর। সঠিক নিয়ম শৃঙ্খলা এবং পর্যালোচনার মাধ্যমেই একটি প্রতিষ্ঠানে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল পাওয়া যায়। আর চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই বিষয় গুলো অনেক গুরত্বপূর্ণ। আর যখন অভিযোগ উঠে পর্যালোচনার অভাবে ভুক্তভোগীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন তখন বিষয়টি কেমন দাঁড়ায়? সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে ভোলা জেলার কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন দুর্বলতায় রোগীদের অনিরাপত্তা নিয়ে। পত্রপত্রিকার তথ্য অনুসারে জানা যায়, ভোলার লালমোহন উপজেলায় নির্মাণ করা হয় ৩৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক। এসব কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ বিনামূল্যে ওষুধ এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাঁচ্ছেন। তবে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নির্মাণের পর থেকে দীর্ঘ বছর ধরে কোনো প্রকার সংস্কার না করায় ক্লিনিকগুলো এখন নিজেই রুগ্ণ হয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ এসব ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিচ্ছেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি)। ঝুঁকিতে আছেন এসব ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা রোগীরাও। লালমোহন উপজেলার ৩৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ২২টির অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনঃনির্মাণ দরকার সাতটি ক্লিনিক ভবনের। পুনঃনির্মাণযোগ্য এসব ক্লিনিক হচ্ছে- কুলচড়া, পূর্ব চতলা জনতা বাজারসংলগ্ন ক্লিনিক, চরমোল্লাজী ভুঁইয়া বাড়ির দরজায়, লেজ ছকিনা, আসুলি, ফাতেমাবাদ এবং দক্ষিণ ফরাসগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিক। এ ছাড়া আরো ১৫টি ক্লিনিক ভবন মেরামত করা জরুরি। তা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তাদের এলাকা থেকে উপজেলা সদর অনেক দূরে। যার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ভরসা কেন্দ্র কমিউনিটি ক্লিনিক। বিগত দিনগুলোতে এখান থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে সেবা নিতে পারলেও এখন ক্লিনিকে আসতে ভয় বোধ করছেন তারা। ক্লিনিকের অধিকাংশ স্থানে ফাটল থাকায় বৃষ্টি হলে ভেতরে আর বসা যায় না। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাতেও রয়েছেন তারা। ওই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নির্মাণের পর কখনো মেরামতকাজ না করাতে ভবনগুলো ধসে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মানুষ সেবার মাধ্যমে সুস্থ হন, আর যদি তার বিপরীত চিত্র ঘটে তখন বিষয়টি আসলেই পীড়াদায়ক। ক্লিনিক ধসে ভুক্তভোগীরা অনাকাক্সিক্ষত বিপদে পড়-ক তা আমরা কখনো প্রত্যাশা করি না। আমরা চাই কোনো প্রকার দুর্ঘটনা ঘটার আগেই যেন আতঙ্কপূর্ণ ক্লিনিকসহ ত্রুটিপূর্ণ সবগুলো ক্লিনিকের মেরামত কাজ করা হয়। এর জন্য সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে।