ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত এক কন্যাশিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শাকিল (২২) নামের এক যুবকের বিরূদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ছাত্রীর পিতা। গত ৩ আগস্ট উপজেলার শাহবাজপুর মোড়াহাটি এলাকায় ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত ধর্ষক শাকিল একই গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে। ঘটনার পর থেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে শাকিল। গত ৮ই আগস্ট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে মামলা (পি-১৬৯) মামলা করেছেন ছাত্রীর পিতা। জন্ম সনদ অনুসারে ছাত্রীর জন্ম তারিখ ৬ই ডিসেম্বর ২০১১ খ্রিষ্টাব্দ। মামলাটির তদন্ত করছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলা ও ভুক্তভোগি সূত্র জানায়, শাহবাজপুর গ্রামের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে ওই কন্যা শিশুটি। মোড়াহাটি এলাকায় নানার বাড়িতে মা সহ বসবাস করছে তারা। একই এলাকার প্রভাবশালী বাদশা মিয়ার ছেলে মো: শাকিল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে ছাত্রীটিকে উত্ত্যক্ত করছে। প্রথমে প্রেম ও পরে বিয়ের প্রস্তাব দিলে প্রত্যাখ্যান হয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি ছাত্রী তার অভিভাবকদের জানিয়ে দেয়। আরো ক্ষিপ্ত হয় শাকিল। ৩ আগস্ট শনিবার সন্ধ্যার পর ছাত্রী একই এলাকায় তার বান্ধবির বাড়িতে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা শাকিল ছাত্রীর গতিরোধ করে। পরে ডেগার দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জিম্মি করে ফেলে। নিজের বসতবাড়িতে নিয়ে ছাত্রীর ইচ্ছার বিরূদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ওদিকে দীর্ঘ সময় পরও বাড়ি না ফেরায় ছাত্রীকে খুঁজতে বের হয় পরিবার ও স্বজনরা। জাহিদ মিয়া নামের এক ব্যক্তি ওই ছাত্রীকে শাকিলদের বাড়ির পাশের সড়ক দিয়ে হেঁটে যেতে দেখার কথা জানান। তারা আন্দাজ করে শাকিলের বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্র শাকিল একটি কক্ষ থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। ওই কক্ষের খাটের উপর থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় সর্দাররা আপোশ রফার কথা বললেও পরবর্তীতে উল্টে যায় ধর্ষক ও তার পরিবার। দেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় পুলিশ শুন্য থানায় মামলা করতে পারেননি ছাত্রীর অভিভাবক। তাই বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ছাত্রীর পিতা মাতা ও নানা বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুকে বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। দেশের প্রচলিত আইনও তো এটাকে সমর্থন করে না। এটা কি আমাদের অপরাধ? এরপর দিয়েছে কু-প্রস্তাব। ব্যর্থ হয়ে শিশু বাচ্চাটিকে ধর্ষণ করে জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। পড়ালেখা বন্ধ। আমাদের মানসম্মান ইজ্জত সব শেষ। আমরা এখন ধর্ষক শাকিলের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. শাকিল মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে যা বলার আমার উকিল বলবে। আমি কথা বললে আর উকিল নিযুক্ত করলাম কেন? এই মূহুর্তে বিষয়টি নিয়ে আপনার সাথে কথা বলার কোন প্রয়োজন আমি মনে করছি না।