মানবদেহে দৈনন্দিন জীবন পরিচালনার জন্য খাদ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বেঁচে থাকতে হলে খাদ্য গ্রহণ প্রতিনিয়ত বাধ্যতা মূলক। খাদ্যের সংকটে ঠিক খাদ্যে গ্রহণ করতে না পারলে মানুষ পুষ্টিহীনতায় দুর্বল হয়ে নানা অসুস্থতায় ভোগতে হয়। এখন কথা হলো খাদ্যে দ্রব্য আমাদের বাধ্যতা মূলক তা আমরা জানি কিন্তু খাদ্য দ্রব্য উৎপাদন চাহিদা অনুযায়ী আছে কিনা ও মানুষ তার চাহিদা মাফিক খাদ্য পাঁচ্ছে কিনা এটাই হচ্ছে মুখ্য বিষয়। বিগত কিছু বছর থেকেই টানা খাদ্যদ্রব্যেই অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতি ছিল। যার প্রভাবে দেশের সাধারণ মানুষ খাদ্যেতে আয়ের বেশির ভাগ খরচ করতে হয়েছে। টানা মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির মধ্যে মানুষ কোনো রকম জীবন যাপন করলেও সাম্প্রতিক সময়ে এসে মূল্যস্ফীতি আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই শেষে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে রেকর্ড হয়ে দাঁড়িয়ে। এত বেশি মূল্যস্ফীতি আর কখনোই দেখেনি দেশের মানুষ। একইভাবে সাধারণ মূল্যস্ফীতির গড়ও দুই অঙ্কের ঘর টপকে গেল। জুলাই শেষে এ হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি, মসলা ও তামাক জাতীয় পণ্যের দাম বাড়ায় জুলাই মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। আগের মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত ১২ আগস্ট এ তথ্য প্রকাশ করেছে। সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলনে দেশ স্থবির হয়ে পড়াতে আমদানি রপ্তানি বন্ধ ছিল যার প্রভাব পড়েছে দ্রব্যমূল্যের উপর। এছাড়াও সরকার পতন, ডলার সংকট ইত্যাদির প্রভাব অন্যতম। এসব সমস্যার ফলে জুলাই মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হয় যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। এর আগে খাদ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি ছিল ২০১১ সালের অক্টোবরে ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। সাম্প্রতিক সরকার পতনের পর দেশের দায়িত্বে রয়েছেন অবন্তিকালীন সরকার। হঠাৎ সরকার পতনের ঘটনায় নতুন সরকারের কাছে দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণ করাটা চ্যালেঞ্জিং হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবুও সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যে সাধারণ মানুষের নাগালে আনা সম্ভব বলে আমরা আশাবাদী। দেশ থেকে সিন্ডিকেট মুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা এবং প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং ও খাদ্য উৎপাদনে সকলকে উৎসাহী করার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণ হবে বলে আমরা মনে করছি। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে সরকার ওই বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে বাস্তবায়ন করবেন।