মানুষ অভাবের তাড়নায় পরিবার দায়িত্বে বিভিন্ন খাতে নিজেকে শ্রমিক হিসেবে নিযুক্ত করে থাকেন। প্রতিনিয়ত পরিশ্রম দিয়ে দায়িত্ব পালন করেন মাস শেষে পারিশ্রমিক পাওয়ার জন্য। মাস শেষের পারিশ্রমিক দিয়ে পরিচালনা করা হয় তাদের জীবন-জীবিকা। এক্ষেত্রে অধিকাংশ শ্রমিকদের উপর তার পরিবারের দায়ভার থাকে। তাই ঐ সকল পরিবারও এসব শ্রমিকদের উপর প্রত্যাশা নিয়ে বেঁচে থাকে। আর যখন এমন শ্রমিকদের মাস শেষে পারিশ্রমিক দেওয়া না হয় তখন বিষয়টি কেমন দাঁড়ায়? কেবল যে শ্রমিক তার পারিশ্রমিক না পাওয়াতে তার ক্ষতি হয়েছে বিষয়টি এমন নয়! একজন শ্রমিক সঠিক সময়ে বেতন না পাওয়া মানে অনেক জায়গায় এর প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে পরিবারের উপর বেশি প্রভাব পড়ে। দৈনিক পত্রিকার পাতা খুললেই এমন শ্রমিকদের সঠিক সময়ে পারিশ্রমিক না দেওয়ার অভিযোগ আমরা প্রায় সময় দেখে থাকি। সম্প্রতি গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা গত বৃহস্পতিবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভ করে। পত্রপত্রিকার তথ্য থেকে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় নায়াগ্রা ট্রেক্সটাইল লিমিটেড নামে তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন ভাতা নিয়ে এমন অনিয়ম করেছে। কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানারটির স্টাফদের পাঁচ মাসের ও শ্রমিকদের এক মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। এ ছাড়াও তাদের ছুটির টাকা, রিজাইনের টাকা, মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকাও দেওয়া হচ্ছে না। গত ৩১ জুলাই, ১৪ আগস্ট ও ২৫ আগস্ট পাওনা টাকা পরিশোধের কথা দিয়েছিল মালিক পক্ষ। কিন্তু সময় মতো বকেয়া টাকা না দেওয়ায় বাসা ভাড়া, দোকানের বিল বাকি পড়েছে। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই কারখানার শ্রমিকরা। বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে গত সোমবার থেকে শ্রমিকরা ওই কারখানায় কর্মবিরতি পালন করে আসছে। কিন্তু শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো কথা না বলেই হঠাৎ করেই কারখানা থেকে চলে যান মালিক পক্ষের লোকজন। মালিক পক্ষের কাউকে না পেয়ে শ্রমিকরা গত বৃহস্পতিবারে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। মহাসড়কে বিক্ষোভ করাতে রাস্তার উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন পরিবহণ শ্রমিক ও যাত্রীরা। আমরা মনে করি শ্রমিকদের সড়কে বিক্ষোভ করাটা যানজটের জন্য একটি বাড়তি প্রভাব বিস্তার করছে। যা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। আমরা আমাদের দেশে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা গুলো দেখতে চায়না। এর জন্য সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। যেসব কারখানার মালিক পক্ষ শ্রমিকদের পারিশ্রমিক নিয়ে এমন প্রতারণা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সরকারকেই। পাশাপাশি আগামীতেও যেন কোনো প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের পারিশ্রমিক নিয়ে এমন অনৈতিক কাজ করতে না পারে সে বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।