নওগাঁর মহাদেবপুরে ঐতিহ্যবাহী ওসমান এগ্রো নামক অটোমেটিক চালকলে একের পর এক হামলা, মারপিট, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করার অভিযোগ করা হয়েছে। ফলে ওই চালকলটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছেন এই চালকলের দেড় হাজারের বেশি শ্রমিক। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৬০-৭০ জন বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এই চালকলে হামলা চালায়। তারা চালকলের মেইন গেট ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ভাংচুর করে এবং সাধারণ লেবারদের বেদম মারধর করে এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। তাদের মারপিটে কমপক্ষে ১০ জন শ্রমিক আহত হন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ওসমান এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজার শাওন জানান, এখানে একই মালিকের পাশাপাশি তিনটি চালকল রয়েছে। অন্য দুটি হলো যমুনা অটোমেটিক রাইস মিল ও রুহুল আমিন অটোমেটিক রাইস মিল। নানা কারণে প্রতিবছর ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ায় এই তিনটি মিলের কাছে সরকারের ও বিভিন্ন মিল মালিকের প্রায় আড়াইশ’ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। একারণে মিল মালিক ওসমান গণি দুবছর আগে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এসব কারণে মিল বন্ধ ছিল। গতবছর নাবিল গ্রুপ এই মিলটি আবার চালু করে। মিলের কাছে পাওনাদারদের টাকা পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হচ্ছিল। কিন্তু একশ্রেণির মিল মালিক এই বিশাল মিলগুলো ভেঙ্গে ফেলে যন্ত্রপাতি বিক্রি করে তাদের পাওনা পরিশোধের দাবি করে প্রায়ই মিলে হামলা চালায়। ফলে তাদের ভয়ে সম্প্রতি নাবিল গ্রুপ তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে চলে যায়। ফলে মিলটি আবার বন্ধ হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার এই মিলে আসা পোরশা উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত ছয়েফ উদ্দিনের ছেলে আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, পাওনা আদায়ের জন্য তারা মহাদেবপুর এসেছিলেন। মিলের শ্রমিকদের বাধার মুখে তারা ফিরে যান।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন জানান, এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।