রাত যত গভীর হয়, রাজধানীর সড়কে কমতে থাকে যানবাহন। এই সুযোগে বেপরোয়া হয়ে ওঠে ছিনতাইকারীরা। তারা মোটরবাইক ও প্রাইভেট কার নিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় শহরের বিভিন্ন সড়ক-অলিগলি। এ সময় তাদের শিকার হয় রিকশাযাত্রী বা পথচারীরা। কখনও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছিনিয়ে নেয় টাকা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী। আবার কখনও ছোঁ মেরে নিয়ে যায় ব্যাগ। এমন কর্মকা-- চলে ভোর অবধি। তারপর আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে আড়ালে চলে যায় তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জোর তৎপরতায় দীর্ঘদিন ছিনতাইয়ের কবল থেকে মুক্ত ছিল রাজধানীবাসী। মাঝে মধ্যে ঘটলেও এতটা ব্যাপক ছিল না। তবে ইদানীং মাথা চাড়া উঠছে দুর্বৃত্তরা, ফলে বেড়েছে ছিনতাই। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, জিগাতলা, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বাংলামোটর, হাইকোর্টসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটে। এসব এলাকায় ছিনতাই করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। ধরা পড়লেও অল্প সময়ে ছাড়া পেয়ে আবারো একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তারা। ছিনতাই উন্নত বিশ্ব ইউরোপ-আমেরিকাতেও আছে। কিন্তু পুলিশি তৎপরতা সেখানে বেশি বলেই অপরাধীরা সহজেই ধরা পড়ে। বরং জাপান-সিঙ্গাপুর ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে এই ধরনের কর্মকা-- নেই। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এর প্রকোপ কমানো যায়নি। সবচেয়ে বেশি ছিনতাই হয় আমাদের বাংলাদেশে। শুধু হয় বললে হবে এটা যেন এখন নিত্যদিনের অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে মানুষের। তাই মানুষকে খুব সাবধানে চলাফেরা করতে হয়। সারাক্ষণ একটা ভয় কাজ করে ভেতরে, এই বুঝি ছিনতাইকারী ধরল। কেননা ছিনতাইকারীর হাত থেকে গরিব-ধনী, উকিল, ডাক্তার, কেউই ছাড় পান না। ওরা ওঁতপেতে বসে থাকে সুযোগ পেলেই নিয়ে যায়। এমনিতেই রাতের ঢাকায় পুলিশি টহল নেই বললেই চলে। সড়কের কোথাও কোথাও গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ব্যারিকেড স্থাপন করা হয়। কোথাও কোথাও পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু সন্দেহভাজনদের তল্লাশিও করা হয় না। ছিনতাইকারীরা পুলিশের টহল এড়িয়ে ছিনতাই করে বেড়ায়। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আইন-আদালত এবং মানুষকে হতে কঠিন, ত্যাগী। অর্থাৎ বিচার যেন হয়ে থাকে এমন হতে হবে। এক্ষেত্রে কে কার সন্তান, ভাই ইত্যাদি দেখার প্রয়োজন নেই। তাহলে সাধারণ মানুষ একটু নিশ্বাস নিতে পারবে। এখন খুব দ্রুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে জোর দিতে হবে। নাহলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে সাধারণ মানুষকে।