আমাদের জীবনের প্রতিটি প্রাণই গুরুত্বপূর্ণ। অকালে মৃত্যু হোক তা আমরা কেউই প্রত্যাশা করি না। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এই অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর সাথেই আমাদের বেঁচে থাকতে হয়। এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যু বিভিন্ন দুর্ঘটনায় হয়ে থাকলেও ডেঙ্গু রোগ এর মধ্যে অন্যতম। আমাদের দেশে প্রতিবছরই হাজার হাজার মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়। প্রতিবছর শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে এই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে। এখন প্রশ্ন থাকতেই পারে প্রতিবছর এমন মানুষদের অকাল মৃত্যু হওয়া স্বত্বেও এর কোনো কাক্সিক্ষত সমাধান মিলছে না কেনো? তবে কী এভাবেই চলবে প্রতিটি বছর? চলতি বছরের প্রথম দিকে ডেঙ্গু রোগের শঙ্কা কিছুটা কম থাকলেও সাম্প্রতিক সময় তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১ হাজার ২২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই দিন ডেঙ্গুর থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮জন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৭৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৬৭, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৬, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২২৮, খুলনা বিভাগে ১৩৪ জন রয়েছেন। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৫৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৮ জন এবং রংপুর বিভাগে ২৮ নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ২৯ হাজার ৭৮৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৫৮ জনের। হঠাৎ ডেঙ্গুর এমন উৎপাতে জনগণের মাঝে শঙ্কা কাজ করছে। বর্তমানে সারাদেশে কম বেশি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টি এবং জমে থাকা পানির কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। এছাড়াও ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা না থাকায় দিনদিন এটি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সুতরাং এর থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতার সাথে সরকারি উদ্যোগ। তবে আমরা আগের নিয়মেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ চাই না। আমরা এমন একটি সমাধান চাই যেই সমাধানে থাকবে না ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যু। আমরা আশা করব, অন্তর্বর্তী সরকার ওই বিষয়ে দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করে জনগণের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবেন।