অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর পুলিশ কাজে ফিরলেও তাদের তৎপরতা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে রাজধানীসহ সারাদেশে অনেক অপরাধমূলক কর্মকা-ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক হামলা, মাজার ভাঙা কিংবা বিভিন্ন সংঘাতেরও খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন কোন্দলে আহত কিংবা ছিনতাইকারীদের হাতে আহতের সংখ্যাও কয়েকগুণ বেড়েছে বলে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো জানাচ্ছে। কেন বা কি কারণে এই ধরনের হামলা বাড়ছে সেটি নিয়ে কোন উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না সরকারের পক্ষ থেকেও। জনগণের একটা সামগ্রিক ক্ষোভ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এই অবস্থার জরুরি অবসান দরকার দেশের সর্বস্তরের জনগণের স্বার্থেই। পুলিশকে নিষ্ক্রিয় রাখলে জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটবে, যা ইতোমধ্যে আমরা দেশের প্রায় সর্বত্র প্রত্যক্ষ করেছি। ৫ আগস্ট গত সরকারের পতনের পর পুলিশ বাহিনী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। এই নিষ্ক্রিয়তা এখনো কাটেনি। দেশের থানাগুলো কোনোরকমে সচল করা গেলেও পুলিশ কার্যত এখনও নিষ্ক্রিয়। বলা যায়, কোথাও পুলিশের টহল পরিলক্ষিত হচ্ছে না। আর এ সুযোগে বিভিন্ন স্থানে বাড়ছে খুন, ছিনতাই, ডাকাতিসহ নানা ধরনের অপরাধ। যে-সব খুনের ঘটনা ঘটছে তার বেশিরভাগই হয়েছে ছিনতাইকারীর হাতে। এসব ঘটনায় অপরাধী ধরা পড়ার উদাহরণও অনেক কম। ওদিকে রাজধানীর রাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশের তৎপরতা নেই বলে বেড়েছে যানজট। এই যানজট কখনো কখনো অস্বাভাবিক হয়ে পড়ছে। পুলিশের টহল না থাকায় সন্ধ্যার পর থেকে অনিরাপদ হয়ে পড়ছে রাজধানীর রাস্তাঘাট। সেই সাথে অজ্ঞান ও মলমপার্টি, পকেটমার, জাল নোটের কারবারিসহ নানা চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। এ অবস্থা বেশিদিন চলতে পারে না। বিভিন্ন থানায় যানবাহনের যে সমস্যার কথা জানা যাচ্ছে, তার দ্রুত সমাধান করতে হবে। একই সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য কাউন্সেলিং প্রয়োজন। দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এবং নগরে পুলিশি টহল জোরদার না করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। অনিরাপদ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করে, রাজধানীসহ দেশের জনগণকে নিরাপত্তা দিতে হবে। পুলিশের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র লুট হয়েছে, সেগুলোর সব উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করার বিষয়টিও তাই অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।