শুকনো ফলের মধ্যে খেজুর সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এর স্টিকি টেক্সচার এবং প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি স্বাদ সবাই পছন্দ করেন। সেইসঙ্গে এটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ। যা এই ফলকে প্রক্রিয়াজাত চিনির একটি চমৎকার বিকল্প করে তোলে। খেজুরের পানি খেজুরের মতোই স্বাস্থ্যকর এবং যারা চিনিযুক্ত পানীয় এড়াতে চান তাদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত বিকল্প। চলুন জেনে নেওয়া যাক খেজুর ভেজানো পানি পানের উপকারিতা সম্পর্কে।
হজমের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
ইদানীং হজমের সমস্যায় ভুগে থাকলে খেজুরের পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এই শুকনো ফলটি ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস, এটি আমাদের পরিপাকতন্ত্রের দারুণ কাজ করে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ (এনআইএইচ) দ্বারা প্রকাশিত একটি সমীক্ষাতে দেখা গেছে, ২১ জন লোক ২১ দিনের জন্য প্রতিদিন ৭টি খেজুর খেয়েছিল। ফলে তাদের মল ফ্রিকোয়েন্সিতে উন্নতি হয়েছে। সুতরাং, আপনি যদি পেটফাঁপা ও গ্যাসের মতো সমস্যাকে দূরে রাখতে চান তবে খেজুরকে সঙ্গে রাখতে ভুলবেন না।
ত্বকের জন্য ভালো
স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল ও তারুণ্যময় ত্বক আমরা সবাই চাই। খেজুরের পানি অনায়াসে এই ইচ্ছে পূরণ করতে সাহায্য করতে পারে। এনআইএইচ অনুসারে, মধ্যবয়সী নারীরা যারা ৫% খেজুরের কার্নেলযুক্ত স্কিন ক্রিম ব্যবহার করেছিলেন তাদের বলিরেখার উপস্থিতি হ্রাস পেয়েছে। খেজুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এর পানিও আপনার ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্ট করতে সাহায্য করবে। শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
খেজুরের পানি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। ডায়াবেটিক রোগীরা খেজুর খেতে পারেন, তবে তা সীমিত হতে হবে। খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে এবং এর পানি খেলে মিষ্টি পানীয়ের লোভ কমবে অনেকাংশে। মেডিসিনাল ফুড জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিক ডায়েটে খেজুর যোগ করলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং লিপিড প্রোফাইল উন্নত করতে সহায়তা করে।
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো
খেজুরের পানি হার্টের জন্যও উপকারী হতে পারে! এনআইএইচ-এর মতে, খেজুর খাওয়ার অভ্যাস কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য, বিশেষ করে প্লাজমা লিপিডের মাত্রা উন্নত করতে পারে। সেইসঙ্গে খেজুরে উচ্চ ফাইবার সামগ্রী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতি এগুলোকে হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য দুর্দান্ত করে তোলে। নিয়মিত খেজুরের পানি পান করলে তা হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, আপনাকে সুস্থ রাখে।
যেভাবে তৈরি করবেন
একমুঠো খেজুর নিয়ে সেগুলোকে অর্ধেক করে কেটে বীজগুলো ফেলে দিন। এবার একটি বড় প্যানে পানি ফুটিয়ে নিন। খেজুরগুলো প্যানে দিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য সেদ্ধ করুন। আগুন বন্ধ করুন এবং একটি ঢাকনা দিয়ে প্যানটি ঢেকে দিন এই খেজুর সেদ্ধ করা পানি ঘরের তাপমাত্রায় কমপক্ষে ৬-৮ ঘণ্টা রেখে দিন। এটি আপনি ঠান্ডা বা গরম উভয়ভাবেই পান করতে পারবেন।