স্বামী স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ভিডিও গোপনে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে পর্ণোগ্রাফি আইনে প্রায় এক মাস আগে মামলা হয় বিশাল মিয়া (২০) নামের যুবকের বিরূদ্ধে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের চানপুর শাহপুর এলাকায় ঘটেছে স্পর্শকাতর এই ঘটনাটি। ঘটনার প্রায় এক মাস পর গত বুধবার পালিয়ে বিদেশ যাওয়ার সময় বিশালকে আটক করে সরাইল থানাকে অবহিত করেন ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুলিশ। সরাইল থানা পুলিশ বিমানবন্দর পুলিশের জিম্মায় থাকা বিশালকে বুঝে নিয়ে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। পুলিশ, মামলা ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চানপুর-শাহপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে বিশাল। একই গ্রামের সাগর মিয়া চার মাস আগে বিয়ে করেছেন। বিয়ের আগে সাগর মিয়ার স্ত্রীকে প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব ও পরে উত্ত্যক্ত করতো বিশাল। সাগর মিয়ার সাথে ওই মেয়ের বিবাহ হয়ে যাওয়ায় বিশাল আরো ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে। ওই গৃহবধূকে কলংকিত করিবে বলে প্রচার করিতে থাকে। বিবাহের পর সাগর মিয়া ও তার স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন সুখে শান্তিতেই চলছিল। গত ২৭ জুলাই শনিবার রাত আনুমানিক ১টা থেকে ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে নিজেদের শয়ন কক্ষে লাইট জ¦ালিয়ে সাগর ও তার স্ত্রী অন্তরঙ্গ মূহুর্তে ব্যস্ত ছিল। সুযোগ নিয়েছে বিশাল। ওই কক্ষের বাহির থেকে জানালার রড বাঁকা করে কৌশলে স্বামী স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে নেয় বিশাল। ওই ভিডিও বিশাল বিভিন্ন লোকজনের কাছে হোয়াটস্ আপ, ম্যাসেঞ্জার, ইমু ও শেয়ারএইট সহ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ওই গৃহবধুর পরিবার স্বজনসহ লোকজন এই ভিডিও দেখে বিশালকে জিজ্ঞেস করলে দায় স্বীকার ডিলিট করে ফেলার আশ্বাস দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে বেঁকে বসে বিশাল। এই ঘটনায় কোন ধরণের আইনগত ব্যবস্থা নিলে ভিডিও গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়। বর্তমানে ওই স্বামী স্ত্রীর পরিবারের সকল সদস্যই চরম হতাশা ও লজ্জাজনক পরিস্থিতির মধ্যে দিনাতিপাত করিতেছে। এই ঘটনায় পারভিন বেগম বাদী হয়ে বিশালকে আসামি করে ২৬ আগস্ট সরাইল থানায় পর্ণোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করেন। মামলার আসামি বিশাল নিজেকে এতদিন আত্মগোপনে রেখেছিল। অবশেষে চতুরতার আশ্রয় নিয়ে গত বুধবার বিদেশ যাওয়ার জন্য সকল কাজ প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছিল। ইমোগ্রেশনে ধরা পড়ে বিমানবন্দর পুলিশ হেফাজতে চলে যায় আসামি বিশাল। পুলিশ হেফাজতে থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বিশাল বলেন, মুঠোফোনটি আমার। কিন্তু ভিডিওটি আমি ধারণ করিনি। ধারণ করেছে আমার আরেক বন্ধু। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির জিজ্ঞাসা বিশাল মিয়া পর্ণোগ্রাফি মামলার আসামি হয়েও পুলিশ ক্লিয়ারেন্সটা কিভাবে ও কোথায় থেকে পেলেন? কারণ যেকোন মামলার আসামি তো পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার কথা না। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, এতদিন পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে থেকে পালিয়ে বিদেশ যাওয়ার সময় পর্ণোগ্রাফি মামলার আসামি বিশাল পুলিশের জালে ধরা পড়েছে। আমরা দাপ্তরিক সকল কাজ সম্পন্ন করে বিশালকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি।